• ‘অযোগ্য’দের বেতন ফেরত: কী ব্যবস্থা? ব্যাখ্যা চায় হাইকোর্ট
    এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়: স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) ২০১৬–এর বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে হওয়া প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীর নিয়োগ গত বছর খারিজ করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ‘অযোগ্য’ শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীদের বেতন চার সপ্তাহের মধ্যে ফেরানোর কথাও বলেছিল বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সব্বর রশিদির বেঞ্চ।

    ওই মামলায় হাইকোর্টের একগুচ্ছ নির্দেশ এখনও কেন কার্যকর হয়নি, তা নিয়ে আদালত অবমাননার মামলায় বেঞ্চের প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। সোমবার রাজ্যের উদ্দেশে বেঞ্চের প্রশ্ন, নির্দিষ্ট ভাবে শনাক্ত হওয়া ‘অযোগ্য’ শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীদের বেতন ফেরাতে কী পদক্ষেপ করেছে রাজ্য?

    ‘অযোগ্য’ চাকরিহারা কয়েকজন এখনও বেতন পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছিল এই এজলাসে। তাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা–ও জানতে চেয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এ দিন সিবিআইকেও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। আগামিকাল, বুধবার সিবিআইকে এই মামলায় তদন্ত রিপোর্ট দিতে হবে। রাজ্য ও এসএসসিকেও তাদের ব্যাখ্যা দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে কাল মামলাটি ফের শুনানির জন্য উঠবে।

    গত বছর ২২ এপ্রিল নিয়োগ বাতিলের পরে বিচারপতি বসাকের বেঞ্চ ‘যোগ্য–অযোগ্য’ পৃথকীকরণ, ‘অযোগ্য’ শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীদের বেতন ১২ শতাংশ সুদ–সহ ফেরানো এবং তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই রায় রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিল। ‘বঞ্চিত’ চাকরিপ্রার্থীদের তরফে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম, সুদীপ্ত দাশগুপ্তদের দায়ের করা আদালত অবমাননার মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, শীর্ষ কোর্ট গত ৩ এপ্রিল গোটা প্যানেল বাতিলের নির্দেশই বহাল রাখে।

    পাশাপাশি হাইকোর্টের অন্য তিনটি রায়ের মধ্যে একটিতে সামান্য পরিমার্জন করলেও সেগুলি খারিজ করেনি সুপ্রিম কোর্ট। ‘অযোগ্য’ বা ‘টেন্টেড’ শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীদের সুদ সমেত টাকা ফেরানোর বদলে শুধুমাত্র বেতনটুকু ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। আর হাইকোর্টের রায়ে নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল— চার সপ্তাহের মধ্যে এই টাকা ফেরাতে হবে। তা না–হলে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রাপকদের সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আদায় করতে হবে।

    অবমাননার মামলায় মামলাকারীদের আইনজীবীর অভিযোগ, হাইকোর্টের আগের নির্দেশ মানা হয়নি। বিচারপতি বসাকের প্রশ্ন, ‘কারা আদালত অবমাননা করেছে বলে আপনারা মনে করছেন?’ আইনজীবী জানান, শিক্ষা দপ্তরের সচিব, এসএসসি–র চেয়ারম্যান, শিক্ষা দপ্তরের কমিশনার ও মধ্যশিক্ষা দপ্তরের সভাপতির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

    আবার সিবিআই কৌঁসুলির উদ্দেশে বিচারপতি বসাকের প্রশ্ন, এসএসসি–র নিয়োগ দুর্নীতির চারটি বিভাগেই পরবর্তী তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই তদন্ত কী পর্যায়ে আছে? সিবিআই জানায়, তদন্ত শেষ। দ্রুত রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব। বুধবারের শুনানিতে সিবিআইকে তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

    এসএসসি–র উদ্দেশে এর আগে বিচারপতি বসাকের বেঞ্চ জানিয়েছিল, কমিশনের ওয়েবসাইটে ওএমআর শিট আপলোড করতে হবে। এ দিন বেঞ্চ জানতে চায়, সেই নির্দেশ কি পালন হয়েছে? কমিশন এই নিয়ে কী পদক্ষেপ করেছে তা–ও জানতে চায় হাইকোর্ট। এ দিন এসএসসি–র বক্তব্যে আদালত সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তাদেরও আগামিকাল ব্যাখ্যা দিতে হবে।

  • Link to this news (এই সময়)