এই সময়, মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওডিশা থেকে ছ’জনকে আটক করল রাজ্য পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)। রবিবার রাতে পড়শি রাজ্যের ঝাড়সুগুড়া থেকে ধৃত এই ছ’জন সামশেরগঞ্জের বেতবোনা এবং জাফরাবাদের হিংসার ঘটনায় জড়িত ছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। জোড়া খুনের ঘটনার সঙ্গে ধৃতদের যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ দিকে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ। রবিবার রাতেই মালদার বৈষ্ণবনগর থেকে ঘরছাড়াদের ফেরানো হয় ধুলিয়ানের বিভিন্ন এলাকায়। টানা দিনদশেক দিন বন্ধ থাকার পরে সোমবার থেকে ওই এলাকাগুলিতে খুলে যায় অধিকাংশ স্কুল। তবে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও আতঙ্কিত। এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে।
সোমবার রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদে গোলমালের পরেই ঝাড়সুগুড়াতে পালিয়ে যান ছ’জন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে তাঁদের চিহ্নিত করে পুলিশ। মোবাইল ফোনের কল ডিটেলস, টাওয়ার লোকেশন দেখে সন্ধান মেলে ওডিশায়। আটক করে সোমবার রাতেই তাঁদের জঙ্গিপুরে আনা হয়েছে। জাফরাবাদেই বাবা এবং ছেলেকে খুনের ঘটনা ঘটেছিল।
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এসপি আনন্দ রায় জানান, এখন সেখানে পরিস্থিতি শান্ত। সবাই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। ওয়াকফের নামে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল, তাতে এখনও পর্যন্ত ১৫৩টি মামলা হয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ২৯২ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় মুর্শিদাবাদে বিক্ষোভের জেরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে ১১ এপ্রিল থেকে। তাতে তিন জনের মৃত্যু হয়। ১২ এপ্রিল ধুলিয়ান পুরসভাতেও ভাঙচুর চালানো হয়। সে দিনই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর চলে, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। লুটপাট চলে ধুলিয়ানের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে।
বিধায়ক, সাংসদের বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে। আতঙ্কে ধুলিয়ানের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা মালদার বৈষ্ণবনগরের পারলালপুরের একটি স্কুলে আশ্রয় নেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সেই শিবির থেকে রবিবার রাতেই তাঁদের সকলকেইফিরিয়ে আনা হয়। পারলালপুর হাইস্কুলের আশ্রয় শিবিরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।