এই সময়: রাজ্যের যে সব এলাকায় হিন্দুরা সংখ্যালঘু, সেখানে হিন্দুদের ভোট দেওয়ার জন্য পৃথক বুথ তৈরির পক্ষে সওয়াল করলেন শুভেন্দু অধিকারী। এই দাবি নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে লিখিত ভাবে জানাবেন বিরোধী দলনেতা।
কোন কোন বিধানসভা এলাকায় এমন পৃথক বুথ প্রয়োজন, তার একটা প্রাথমিক তালিকাও দিয়েছেন শুভেন্দু। যদিও এই দাবি অবাস্তব ও দেশের সংবিধান–বিরোধী বলে মনে করছে তৃণমূল। বামেরাও শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার অভিযোগ করেছে।
বিধানসভার গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে সোমবার শুভেন্দু বলেন, ‘যেখানে পঞ্চাশ শতাংশের নীচে হিন্দু রয়েছেন, সেখানে তাঁদের ভোট দিতে দেবে না। সিতাই, দিনহাটা, শীতলখুচি, ক্যানিং, গোসাবা, বাসন্তী, গোসাবায়, হাড়োয়া, বাদুড়িয়ায় ভোট দিতে দেবে না। এ ছাড়া মুর্শিদাবাদের একটা বড় অংশ তো রয়েছে।
যেখানে হিন্দুরা সংখ্যালঘু সেখানে হিন্দুদের জন্য আলাদা বুথ তৈরি করতে হবে। হিন্দু পল্লিতে আলাদা বুথ করতে হবে।’ শুভেন্দুর যুক্তি, করোনার সময়ে যদি বাড়িতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণ করতে পারেন তা হলে হিন্দু ও আদিবাসী এলাকায় বিশেষ বুথের বন্দোবস্ত করাও সম্ভব। এখন থেকে জনবিন্যাস ধরে বুথ ম্যাপিং করা প্রয়োজন বলেও বিরোধী দলনেতার দাবি।
শুভেন্দু দিনহাটা বিধানসভার কথা উল্লেখ করায় পাল্টা জবাবে সেখানকার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘দেশের সংবিধান ও আইন–বিরোধী, অবাস্তব কথা বলছেন উনি। বিরোধী দলনেতার পদে থাকার যোগ্যতা নেই ওঁর। এই সংবিধান বিরোধী কথা বলার জন্য ওঁর বিরোধী দলনেতার পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত।’
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলে মুসলিম লিগ ও হিন্দু মহাসভা এই রকম পৃথক ইলেক্টোরেটের কথা বলত। শুভেন্দু সেই মুসলিম লিগ ও হিন্দু মহাসভার সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ফেরাতে চাইছেন।’
রবিবারের ব্রিগেডে শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন সেলিম। শুভেন্দু এ দিন পাল্টা বলেন, ‘তিনবার ভোটে হেরেছেন। রাজ্যের প্রতিবাদীদের যখন অন্য জায়গায় বদলি করা হয়, তখন সেলিমের ঘরের লোক বদলি হয় না। গত ১৪ বছর কলকাতায় রয়েছেন।’
শুভেন্দু তাঁর স্ত্রী–র পোস্টিং নিয়ে ইঙ্গিত করায় সেলিম পাল্টা বলেন, ‘রাস্তার মোড়ে পাগল কিছু বললে তার উত্তর দিতে নেই। বিধানসভার সামনে দাঁড়িয়ে বললেও পাগলের কথা প্রলাপই হয়।’ এই তরজার মধ্যে উত্তরবঙ্গের লোকসঙ্গীত গায়ক মণীন্দ্র বর্মণকে আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন শুভেন্দু। চাকরিহারাদের নিয়ে গান গেয়েছিলেন মণীন্দ্র। সেই কারণে পুলিশ এই লোকশিল্পীকে গ্রেপ্তার করতে চায় বলে শুভেন্দুর আশঙ্কা।
বিরোধী দলনেতার কথায়, ‘কোচবিহারের এসপিকে চ্যালেঞ্জ করছি ক্ষমতা থাকলে কেশাগ্র স্পর্শ করে দেখুন। আইনজীবীকে দিয়ে জেলার এসপি ও মাথাভাঙা থানাতে ই–মেল করব। এফআইআর যদি হয় তার কপি ফরোয়ার্ড করতে হবে। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে আইনি সহায়তা দেবো।’