• রাজ্য তোলপাড় করার হুঙ্কার চাকরিহারাদের, রাতভর এসএসসি ভবনের বাইরে শিক্ষকরা
    এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • রাতভর পথে শিক্ষকরা। হাততালি দিয়ে, ফাঁকা বোতল বাজিয়ে, ঘন ঘন স্লোগানে স্লোগান তুলে প্রতিবাদ চলে সোমবার রাতভর। আচার্য সদনের (এসএসসি ভবন) ভিতরে তখন স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বসে। মঙ্গলবার সকালেও আচার্য সদনেই রয়েছেন তিনি, খবর এমনটাই। এ দিন সকাল থেকেই এসএসসি ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চাকরিহারারা। স্লোগান উঠছে, ‘চোর, চোর’। এসএসসি ভবন-সহ গোটা এলাকায় কড়া পুলিশি পাহারা। ‘রাজ্য তোলপাড়’ করার ডাক দিয়েছেন চাকরিহারারা। ঘেরাও চালিয়ে যাবেন, এমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।

    সূত্রের খবর, আজ বিকাল ৪টের মধ্যে মিটিং করে পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেবেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। এ দিনই এসএসসিকে ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হতে পারে ‘যোগ্য-অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশের জন্য। যদিও সেই তালিকা স্কুল সার্ভিস কমিশন আদৌ প্রকাশ করতে পারবে কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে চাকরিহারাদেরই একাংশের।

    সোমবার চাকরিহারাদের এসএসসি ভবন অভিযান ছিল। প্রথম দিকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান চললেও এসএসসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে চাকরিহারাদের ১৩ জনের এক প্রতিনিধি দলের বৈঠক চলাকালীনই বাইরে শুরু হয় অশান্তি। বাইরে অবস্থানকারীরা জানান, বৈঠকের মধ্যেই ভিতর থেকে খবর এসেছে, থার্ড কাউন্সেলিং পর্যন্ত যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদেরই যোগ্যদের তালিকায় রাখা হবে। চাকরিহারাদের দাবি, তেমনটা হওয়ার অর্থ, চতুর্থ কাউন্সেলিং থেকে যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন, সকলেই অযোগ্য বলে প্রমাণিত।

    এর পরই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবাদের আগুন। বিক্ষুব্ধ চাকরিহারাদের দাবি, বিভাজন রাজনীতি করছে এসএসসি এবং রাজ্য সরকার। আন্দোলনকে ভেঙে দিতে, কিছু লোককে বৈধতার ছাড়পত্র দিয়ে সরিয়ে দিতে চাইছে। এরই মধ্যে চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখ ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-র তরফে চিন্ময় মণ্ডল জানান, আচার্য সদন ঘেরাও হবে। মুহূর্তে আন্দোলনের ঝাঁঝ চরমে পৌঁছয়। রাস্তাতেই বসে পড়েন চাকরিহারা শিক্ষক, শিক্ষিকারা। সেই অবস্থান বিক্ষোভ চলে সারা রাত।

    যদিও সোমবার মধ্যরাতের বিবৃতিতে এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান, স্কুল সার্ভিস কমিশন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই চলবে। এসএসসি-এর দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে যাঁরা স্কুলে গিয়ে ক্লাস নেবেন তাঁদেরই নিয়ম মেনে বেতন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা দপ্তর। সময় মতো সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকেই বেতন পাবেন সেই শিক্ষক শিক্ষিকারা।’

    অন্য দিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, যোগ্য-অযোগ্য তালিকা দিতে হবে, সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে কোথাও লেখা নেই। এই তালিকা প্রকাশ করলে আইনি জটের আশঙ্কার কথাও বলেন ব্রাত্য। এই আবহে আজ এসএসসি ভবনের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন চাকরিহারারা। লড়াই আরও তীব্র করার ডাক দেওয়া হয়েছে।

  • Link to this news (এই সময়)