সঞ্জয় চক্রবর্তী ■ শিলিগুড়ি
রাজ্য সরকার হাত তুলে দিয়েছে। নিজেদের অক্ষমতা প্রকাশ করেছে সেনাও। তাও হাল ছাড়েননি উত্তর সিকিমের লাচেনের বাসিন্দারা। লাচেন থেকে জেমা হয়ে গুরুদোঙমার লেকে যাওয়ার রাস্তা তৈরির কাজে নেমেছেন স্থানীয়রা। পাহাড় কেটে, পাথর সরিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রাস্তা। এমনকী, লাচেন লা নদীতে সেতুও তৈরির কাজে নেমেছেন তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, চলতি মাসেই গুরুদোঙমার লেকে যাওয়ার এই রাস্তা তৈরি করে ফেলবেন তাঁরা। ২০২৩ সালে এই রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়ে। উড়ে যায় সেতুও। সে বার ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে গোটা উত্তর সিকিমই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রাজ্য সরকার প্রাথমিক ভাবে লাচুংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করার পরে লাচেনের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করে। লাচেন থেকে থাঙ্গু হয়ে গুরুদোঙমার লেকে যাওয়ার রাস্তাও খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু লাচেন থেকে সরাসরি জেমা হয়ে গুরুদোঙমার লেকে যাওয়ার রাস্তাটি বেহালই ছিল। এলাকাটি এমনই দুর্গম যে সরকারি পরিকাঠামো কিংবা সেনা, কারও পক্ষেই রাস্তা মেরামতি সম্ভব ছিল না।
অথচ, কে না জানে, পাহাড়ের এই সমস্ত প্রাকৃতিক লেকই স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে পরম পবিত্র। মরশুমের বিভিন্ন ঋতুতে বাসিন্দারা ওই লেকে গিয়ে পুজোপাঠ করেন। তা ছাড়া, ওই পথেও বেশ কিছু গ্রাম রয়েছে। সেই সমস্ত গ্রামের বাসিন্দারা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকেই। হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাঁদের। শেষ পর্যন্ত সরকারি অনুমতি নিয়েই রাস্তা মেরামতির কাজে নামে লাচেন ডোমসা (সিকিমের প্রাচীন পঞ্চায়েত ব্যবস্থা)। সিকিমের প্রত্যন্ত এলাকার এই সমস্ত ডোমসার পরিচালকরাই ওই এলাকার শেষ কথা। ডোমসার নির্দেশে পথে নামেন লাচেনের হোটেলের মালিক থেকে গাড়ির মালিক সকলেই।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, 'লাচেন ডোমসা আমাদের কাছেও শিক্ষণীয় সংস্থা। প্রত্যন্ত ওই এলাকার সমস্ত স্তরের মানুষকে একজোট করে তারা লাচেন থেকে সরাসরি গুরুদোঙমার লেকে যাওয়ার রাস্তাটি পুনরুদ্ধারে নেমেছেন। চলতি মরশুমে রাস্তা খুলে গেলে পর্যটকেরাও উপকৃত হবেন।'