কিরণ মান্না: নিউ দীঘার জীববৈচিত্র্য পার্কের গেটে ঝুলছে তালা। প্রায় কুড়ি দিন ধরে বন্ধ এই পার্ক। ফিরে যাচ্ছেন পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশ্ন উঠছে, কেন বন্ধ এই পার্ক? চলতি মাসের শেষেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দীঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে আসছেন। তার আগেই পার্ক খুলে দেওয়ার দাবিতে উঠছে জোরাল সুরে।
নিউ দীঘার জীব বৈচিত্র্য বা বায়োডাইভার্সিটি পার্ক, দীঘা পর্যটন শহরের অন্যতম আকর্ষণ। শহরের মধ্যে গ্রাম্য পরিবেশে গড়ে ওঠা এই পার্ক যেন প্রকৃতির কোলে হারিয়ে যাওয়ার এক আদর্শ জায়গা। দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের ২ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তায় গড়ে উঠেছে এই পার্ক।
২০২২ সালে নিউ দীঘার চাঁপাবনি মৌজায় তিন একর সরকারি জমিতে তৈরি হওয়া এই পার্কে রয়েছে নারকেল, তাল, আম-সহ বিভিন্ন গাছ। রয়েছে ভেষজ ও পাতাবাহার গাছপালাও। সুদৃশ্য চেয়ার, পদ্মপুকুর ও জলাভূমিতে দেশীয় ও পরিযায়ী পাখির আনাগোনা - সব মিলিয়ে কাছেপিঠে দীঘায় দু-একদিন বেড়াতে এসে শহুরে পরিবেশের ঘ্যানঘেনানি কাটিয়ে গ্রাম্য পরিবেশের মন কাড়ে এই পার্ক।
নন্দগোপাল পাত্র নামের এক শিক্ষক বলেছেন, 'বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সহায়ক এই পার্ক। তাই দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।'
নিরিবিলিতে কিছু সময় কাটাতে চাইলে এই পার্ক আদর্শ। বিশেষত কাপল ও নবদম্পতিদের কাছে এটি অত্যন্ত প্রিয় জায়গা। কিন্তু বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই পার্কের গেটেই তালা ঝুলছে। এক পর্যটক শিবশঙ্কর পাল বলেছেন, 'এমন একটা সুন্দর জায়গা বন্ধ দেখে খুব খারাপ লাগছে। ঘুরে দেখতে এলাম, ঢুকতেই পারলাম না।'
এই অবস্থার পেছনে রয়েছে প্রশাসনিক কারণ। পার্ক পরিচালনার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে ডিএসডিএ। ডিএসডিএ আধিকারিক চন্দন কর্মকার বলেছেন, 'পার্কের মানোন্নয়ন ও পরিচালনার স্বার্থে আমরা একটি সংস্থাকে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা করছি। সেই প্রক্রিয়ায় আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে পার্ক।'
পর্যটক ও স্থানীয়দের দাবি, জীববৈচিত্র্য রক্ষার পাশাপাশি এই পার্কে বোটিং ও রেস্তরাঁর ব্যবস্থাও চালু করা হোক। তবেই পর্যটন আরও বাড়বে, লাভবান হবে দীঘা শহরও।