দলের নেত্রীর সঙ্গে অশ্লীল চ্যাট প্রকাশ্যে! এবার বিতর্কে বংশগোপাল, ‘পায়ে ধরে’ পোস্ট প্রত্যাহারের আর্তি
প্রতিদিন | ২২ এপ্রিল ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: মহিলাঘটিত কেলেঙ্কারি পিছু ছাড়ছে না বঙ্গ সিপিএম নেতাদের। প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ, প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যর পর এবার মহিলাঘটিত অভিযোগে বিদ্ধ বাম সরকারের আরেক প্রাক্তন মন্ত্রী ও সাংসদ পশ্চিম বর্ধমানের নেতা বংশগোপাল চৌধুরী। দলের এক মহিলা নেত্রীর সঙ্গে ‘অশ্লীল’ চ্যাট প্রকাশ্যে চলে এল। আর তা সমাজমাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে।
আসানসোলের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগে সরব হয়েছেন মুর্শিদাবাদের এক সিপিএম নেত্রী। তিনি জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলরও। যা নিয়ে প্রবল অস্বস্তিতে আলিমুদ্দিন। পুরোটাই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন বংশগোপাল। তাঁর দাবি, আগেও ষড়যন্ত্র হয়েছে। এই চক্রান্তের পিছনে দল বা বাইরের কেউ থাকতে পারে। একটা লবি কাজ করছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘বিষয়টি পার্টির অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির কাছে রয়েছে। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের সময়ই বংশগোপালের বিরুদ্ধে ওই সিপিএম নেত্রী ফেসবুক পোস্ট করেছিলেন। তখন থেকেই বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষো চলছিল। মেসেঞ্জার ও হোয়াটস্যাপে অশ্লীল মেসেজ পাঠিয়েছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ! আর সেই অশ্লীল চ্যাট প্রকাশ্যে আনেন মুর্শিদাবাদের ওই সিপিএম নেত্রী। রবিবার ব্রিগেড সভার পরেই ওই চ্যাটের স্ক্রিনশট সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। বংশগোপালের বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় সরব দলের মহিলা কর্মীরাও। অভিযোগকারিণী ওই মহিলা নেত্রীর পোস্টটি রিপোস্ট করে সরব হন অপর্ণা কুমার নামে এক মহিলা। সরাসরি প্রাক্তন সাংসদকে চরিত্রহীন বলে তোপ দাগেন তাঁরা। দলের ওই প্রাজ্ঞ ও প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? সোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সিপিএমের একাধিক মহিলা কর্মী।
অভিযোগকারী মহিলা বলেন, তিনি দলের হয়ে যে সমস্ত কাজ করে থাকেন, তা ফেসবুকে পোস্ট করেন। তিনি সোশাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভ এবং তার সোশাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টটি মনিটাইজেশন ভেরিফায়েড। সেখানে এই বংশগোপাল চৌধুরি কমেন্ট করতেন, উৎসাহ দিতেন। তাঁর দাবি, এত বড় একজন নেতা এভাবে অপরিচিত নেত্রীকে এত কমেন্ট করছেন। তিনি তাতে প্রথমে আপ্লুত হয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে পরিস্থিতি বদলে যায়। মহিলা নেত্রীর অভিযোগ, একদিন মধ্যরাতে বংশগোপাল নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে অশ্লীল মেসেজ শুরু করেন। গত বছর নভেম্বর মাসে তিনি পার্টির জেলা সিপিএম সম্পাদককে অভিযোগ আকারে সমগ্র বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য সম্মেলনের সময় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম-সহ অন্যান্য নেতৃত্বের সঙ্গে বংশগোপাল চৌধুরির ছবি দেখা যায়। তারপরই ক্ষুব্ধ হয়ে সেই ছবি সমেত বংশগোপালের কীর্তি ফাঁস করে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন ওই মহিলা নেত্রী। তিনি লেখেন, “এই চরিত্রহীন, লোচ্চা, লম্পট কী করে সিপিএম পার্টির রাজ্য সম্মেলনের প্রতিনিধি হয়?’’ অভিযোগকারিণীর দাবি, ‘‘পোস্ট করার পর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উনি জানান, বিষয়টি তদন্ত করা হবে।’’ মহিলা নেত্রী আরও বলেন, ‘‘আমি আমার পরিবার নিয়ে ভয় পাচ্ছি। দলকে দেওয়া আমার সমস্ত ডকুমেন্ট লিক হয়ে যাচ্ছে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।’’ এদিকে উল্কার গতিতে ভাইরাল হচ্ছে বংশগোপালের সেই ‘অশ্লীল’ মেসেজের স্ক্রিনশট।