• কেন্দ্রীয় কমিটির পর মিনাক্ষীকে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতেও নিল সিপিএম, আলিমুদ্দিনে বর্ধমানের শক্তিবৃদ্ধি
    আনন্দবাজার | ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • যুব সংগঠন ছাড়ার আগেই মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে নিয়ে নিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। গত ৬ এপ্রিল মাদুরাইয়ে শেষ হয়েছে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস। সেখানে মিনাক্ষীকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছিল। সোমবার রাজ্য কমিটির বৈঠক থেকে ১৫ জনের নতুন সম্পাদকমণ্ডলী গঠন করা হল। তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মিনাক্ষীকে। তাঁর সঙ্গে সম্পাদকমণ্ডলীতে নতুন মুখ পূর্ব বর্ধমানের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন। পার্টি কংগ্রেস থেকে সৈয়দকেও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করেছিল সিপিএম।

    বয়সের কারণে রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়েছিলেন বাঁকুড়ার নেতা অমিয় পাত্র এবং উত্তরবঙ্গের নেতা জীবেশ সরকার। গত মেয়াদের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতেও ছিলেন এই দুই নেতা। অমিয় এবং জীবেশের জায়গায় রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে এলেন মিনাক্ষী এবং সৈয়দ। ঘটনাচক্রে, সিপিএমের বর্তমান যে ১৫ জনের সম্পাদকমণ্ডলী দাঁড়াল, তাতে দুই বর্ধমান থেকে রইলেন তিন জন। মিনাক্ষী পশ্চিম বর্ধমানের, সৈয়দ পূর্ব বর্ধমানের। এ ছাড়াও, আগে থেকেই সম্পাদকমণ্ডলীতে রয়েছেন বর্ধমানের আর এক নেতা আভাস রায়চৌধুরী। ফলে অনেক দিন বাদে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে ‘বর্ধমান লাইনের’ শক্তি বাড়ল। একটা সময় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে অবিভক্ত বর্ধমান থেকে একই সঙ্গে ছিলেন নিরুপম সেন, মদন ঘোষ এবং বিনয় কোঙার। এই তিন জনই অনেক দিন প্রয়াত হয়েছেন। মাঝে বর্ধমানের সেই অর্থে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে শক্তি ছিল না। এ বার তা বাড়ল বলেই অভিমত সিপিএমের অনেকের। অন্য দিকে, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে বাড়ল মহিলার সদস্যের সংখ্যাও। এত দিন সম্পাদকমণ্ডলীতে ছিলেন শুধু দেবলীনা হেমব্রম। এ বার তাঁর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হলেন মিনাক্ষী। রাজ্য কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক এমএ বেবি। মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তৃতা করার কথা।

    আগামী জুনের তৃতীয় সপ্তাহে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্মেলন হবে। যে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন মিনাক্ষী। কিন্তু মিনাক্ষী সদ্যই ৪০ বছর পার করেছেন। তাই তিনি আর যুব সংগঠনে থাকবেন না, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে যুব সংগঠন ছাড়ার আগেই তাঁকে রাজ্য স্তরে তুলে আনলেন মহম্মদ সেলিমেরা।

    নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে কারা সদস্য হবেন, সেই ব্যাপারে নানা নাম নিয়ে জল্পনা ছিল। কিন্তু একটা ব্যাপারে কোনও জল্পনাই ছিল না যে, মিনাক্ষীকে নেতৃত্বে তুলে আনা হবে। ফেব্রুয়ারি মাসেই আনন্দবাজার ডট কমে লেখা হয়েছিল, মিনাক্ষীকে কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে সদস্য করা প্রায় পাকা। এপ্রিল মাসে সেটাই বাস্তবায়িত হল। তবে বর্ধমানের সৈয়দকে কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত করা সিপিএমের অভ্যন্তরীণ সমীকরণের নিরিখে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। সেই অর্থে সৈয়দ কোনও পরিচিত নাম নয়। কিন্তু তিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা নেতা। গত সম্পাদকমণ্ডলীতে সেলিম ছাড়াও সংখ্যালঘু অংশের নেতা হিসাবে জিয়াউল আলম। এ বার সেই সঙ্গে যুক্ত হল সৈয়দের নামও।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)