এই সময়, সোদপুর: ইউরোপের কসোভোতে বসেছিল ইউরোপিয়ান গার্লস ম্যাথেমেটিক্যাল অলিম্পিয়াড (ইজিএমও-২০২৫) এর আসর। তাতে নজরকাড়া সাফল্য ভারতের চার প্রতিযোগীর। যার মধ্যে রয়েছে সোদপুরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শ্রেয়া গুপ্ত রায়। দেশের হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া চার ছাত্রীর দু’জন রুপো ও দু’জন ব্রোঞ্জ মেডেল পেয়ে দেশের মুখ উজ্বল করেছে।
সোদপুর অমরাবতীর বাসিন্দা সোদপুর সুশীলকৃষ্ণ শিক্ষায়তন ফর গার্লসের ছাত্রী শ্রেয়ার ব্রোঞ্জ জয়ে পরিবার, স্কুল তো বটেই, সোদপুরের মানুষের মধ্যেও এখন খুশির জোয়ার। ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী শ্রেয়া। ক্লাসে প্রথম ছাড়া কখনও দ্বিতীয় সে হয়নি। শ্রেয়ার সঙ্গে সাফল্যের কিনারায় পৌঁছনো তার তিন সহযোগী মুম্বইয়ের শ্রেয়া মান্ধানা, কেরলের সঞ্জনা চাকো ও পুনের শায়ী প্যাটেল। শুক্রবার তারা কসোভো থেকে সরাসরি মুম্বই হয়ে যে যার নিজের বাড়িতে পৌঁছেছে।
বিশ্বের মোট ৬০টি দেশ ইজিএমও–তে অংশগ্রহণ করেছিল। প্রতিটি দেশ থেকে চারজন করে প্রতিনিধির ওই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ ছিল। এই পরীক্ষায় দেশের যে কোনও স্কুলের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা অংশ নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশ থেকে চার জনের টিম চিহ্নিত করে পাঠাতে হয়। চিহ্নিতকরণের দায়িত্ব টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর) ও হোমি ভাবা সেন্টার ফর সায়েন্স এডুকেশনের (এইচবিসিএসই)। তারা নানান স্তরে পরীক্ষা নিয়ে সেরা চার ছাত্রীকে প্রতিযোগিতায় পাঠায়।
প্রথম ধাপে পড়ুয়াদের ইন্ডিয়ান অলিম্পিক কোয়ালিফায়ার ইন ম্যাথেমেটিক্স (আইওকিউএম) পরীক্ষা দিতে হয়। দ্বিতীয় ধাপে সেখানে যারা সফল তাদের রিজিওনাল ম্যাথেমেটিক্যাল অলিম্পিয়াডে বসার সুযোগ দেওয়া হয়। সেখানকার সফলদের নিয়ে তৃতীয় ধাপে হয় ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ম্যাথেমেটিক্যাল অলিম্পিয়াড। সেখান থেকে সফল ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে চতুর্থ ধাপে ইন্টারন্যাশনাল ম্যাথেমেটিক্যাল অলিম্পিয়াড ট্রেনিং ক্যাম্পে সুযোগ দেওয়া হয়। এই ধাপে নানান পরীক্ষার মাধ্যমে ছয় সফল ছাত্রছাত্রী ইন্টারন্যাশনাল ম্যাথামেটিক্যাল অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। ওই ট্রেনিং ক্যাম্প থেকে আবার সেরা চার ছাত্রীকে ইজিএমও–তে পাঠানো হয়। সেখানে দু’দিন ধরে সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে পরীক্ষার পর শ্রেয়ারা সাফল্য পেয়েছে।
সুশীলকৃষ্ণ শিক্ষায়তনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নীতা দাস সাধুখাঁ বলেন, ‘শ্রেয়ার সাফল্যে আমরা গর্বিত। আমরা তাকিয়ে রয়েছি ওর উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্টের দিকে।’ শ্রেয়ার বাবা পেশায় শিক্ষক সুদীপ্ত গুপ্ত বলেন, ‘রাস্তা অনেক লম্বা। চার জন মেয়ে ও সাপোর্ট স্টাফরা টিম হিসেবে এই সাফল্য এনেছে। আগামীতে আরও পথ চলতে হবে।’ মেধাবী ছাত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পানিহাটির পুরপ্রধান সোমনাথ দে।