• আবার বিএসএফের স্থায়ী শিবিরের দাবি
    আনন্দবাজার | ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • শমসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানে সোমবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছেও বিএসএফের স্থায়ী শিবিরের দাবি তুললেন বাসিন্দারা। দিন কয়েকের গোলমালে রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) তদন্ত অবশ্য পুরোদমে চলছে। ধরপাকড়ও অব্যাহত।

    এ দিনই শমসেরগঞ্জের ১৩ জনকে ওড়িশা থেকে ধরা হয়েছে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, পুলিশকে আক্রমণের মতো অভিযোগে। পুলিশ সূত্রের দাবি, ঘটনার পরে এরা ওড়িশার ঝাড়সুগুদায় পালিয়েছিল। ধৃতদের মধ্যে জোড়া খুনের অভিযোগে সুলিতলা থেকে ধৃত এক ব্যক্তির দুই ছেলেও রয়েছে। রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম কলকাতায় জানান, মুর্শিদাবাদ-কাণ্ডে জোড়া খুনের সঙ্গে ধৃতদের যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওড়িশা থেকে ধৃতদের জঙ্গিপুরে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।।

    পুলিশ জানিয়েছে, বেঙ্গল এসটিএফের পাঁচ সদস্যের টিম ওড়িশার ঝাড়সুগুদা যায়। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে প্রথমে ধরে খুনের ঘটনায় এক ধৃতের দুই ছেলেকে। তাদের জেরা করে আরও ১১ জনকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। সব মিলিয়ে গ্রেফতার হয়েছে ৩০৬ জন। তাদের মধ্যে চার জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ রয়েছে। জঙ্গিপুর পুলিশ-জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। জাফরাবাদ এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের তিনটি শিবির রয়েছে। মালদহের পারলালপুর থেকে সকলেই ফিরেছেন শমসেরগঞ্জে। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে। নতুন করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’’

    তবে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতার মধ্যেই এলাকাবাসী বার বার এলাকায় বিএসএফের স্থায়ী শিবিরের দাবি তুলেছেন। শনিবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যদের পরিদর্শনের সময়েও তাঁরা এই দাবি তোলেন। শমসেরগঞ্জের নানা গ্রাম থেকে যাঁরা মালদহের পারলালপুর চলে গিয়েছিলেন, তাঁরাও একই দাবি করেছিলেন।

    এলাকার কয়েক জন পড়ুয়া এ দিন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্তকে জিজ্ঞাসা করে, ‘‘স্কুলে যাব কবে?’’ তাদের দাবি, ভয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। সুকান্তের দাবি, “ওয়াকফ আন্দোলনের অজুহাতে শমসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানের একাধিক গ্রামে লুট করা ও আগুন লাগানো হয়েছে। পুলিশ নিষ্ক্রিয় দর্শকের ভূমিকায় দাঁড়িয়ে দেখেছে। তাই এত আতঙ্ক ছড়িয়েছে।” তাঁর সংযোজন: ‘‘এলাকার মানুষ বিএসএফের স্থায়ী ক্যাম্প চেয়েছেন। রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করব, এখানকার মানুষের সংবেদনশীলতাকে মাথায় রেখে এই এলাকায় বিএসএফের স্থায়ী ক্যাম্প বসাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আবেদন করুক। কথা দিচ্ছি, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত তার ব্যবস্থা করে দেব।” জঙ্গিপুরের সাংসদ তৃণমূলের খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘ওঁরা যদি মনে করেন, বিএসএফ শিবির করলে এলাকাবাসী সুরক্ষা পাবেন, তাতেও সাহায্য করব। তবে এটা প্রশাসন ও রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়।’’

    সুকান্তের অভিযোগ, ‘‘৫৩টি দোকান লুট ও ভাঙচুর হয়েছে। অথচ, মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে একটিও নিন্দাসূচক শব্দ উচ্চারণ করেননি। ওঁর শমসেরগঞ্জে এসে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। এ রকম মুখ্যমন্ত্রী থাকলে পশ্চিমবঙ্গের বিভাজন নিশ্চিত।’’ তৃণমূলের সাংসদ খলিলুর পাল্টা দাবি করেন, ‘‘আমরা প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে গিয়েছি। সকলে যাতে নিরাপদে থাকতে পারেন, তার সব রকম চেষ্টার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)