চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
সুপ্রিম নির্দেশে অনেক শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ায় বহু স্কুল বন্ধের মুখে। তবে সরকারি এবং সরকার পোষিত বিদ্যালয়ে পরিকাঠামোর অভাবে কোচবিহার জেলায় আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে বেশ কিছু স্কুল। পড়ুয়ার সংখ্যাও কমছে প্রায় প্রতিদিন। গত চার-পাঁচ বছরে ১৩টি বিদ্যালয়ের সংখ্যা কমে যাওয়ার পাশাপাশি এক বছরে পড়ুয়ার সংখ্যা কমেছে প্রায় ১৫ হাজার। সব মিলিয়ে এই পরিস্থিতিতে সরকারি স্কুলগুলোর ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সমরচন্দ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে এখনও ভর্তি চলছে। পড়ুয়ার সংখ্যা আরও বাড়বে। চলতি শিক্ষাবর্ষে এখনও ভর্তি চলছে। পড়ুয়ার সংখ্যা আরও বাড়বে।
কোচবিহার জেলায় ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে সব মিলিয়ে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৫০৮। তার মধ্যে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৪৮। জুনিয়র হাইস্কুলের সংখ্যা ২৬০। চলতি শিক্ষাবর্ষে সেই স্কুলের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৪৯৫-এ। এর মধ্যে জুনিয়র হাইস্কুলের সংখ্যা ২৬০ থেকে কমে ২৪৫ হয়েছে। অর্থাৎ ১৫টি জুনিয়র হাইস্কুলের সংখ্যা কমেছে। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৪৮ থেকে বেড়ে ২৫০টি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দু'টি জুনিয়র স্কুল, হাইস্কুলে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে ১৩টি বিদ্যালয় কমেছে কোচবিহারে।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র মেখলিগঞ্জ মহকুমা এলাকায় অন্তত পাঁচ থেকে ছ'টি জুনিয়র হাইস্কুল তৈরি হলেও সেগুলো আজ পর্যন্ত চালু হয়নি। লক্ষ টাকা খরচ করে বিদ্যালয়গুলি তৈরি হলেও সেখানে না-রয়েছে শিক্ষক, না আছে পড়ুয়া। তবে স্কুলের সংখ্যা কমেছে তাই নয়, পাল্লা দিয়ে সরকারি এবং সরকার পোষিত বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যাও কমছে। ২০২৪ সালের কোচবিহার জেলায় পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব মিলিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ৩ লক্ষ ৮১ হাজার ৪৯৫ জন। চলতি শিক্ষাবর্ষের ৩১ মার্চ পর্যন্ত জেলায় পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ৪৫৩ জন। অর্থাৎ একটি শিক্ষাবর্ষ পার হতেই এখনও পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪২ একজন ছাত্রছাত্রী কমেছে।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মলয়কান্তি রায় বলেন, 'সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলে পরিকাঠামোর সমস্যা আছে। শিক্ষক কম, আধুনিক স্মার্ট ক্লাস নেই, এ ছাড়া অন্য পরিকাঠামোর খামতি আছে। তাই বেসরকারি স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করছেন অনেকে।'