রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: বাংলায় আরও এক জিবিএস বা গুলেনবারি সিনড্রোমে আক্রান্তের হদিশ। তৃতীয় লিঙ্গের ওই রোগী আলিপুরদুয়ার শহরের বাসিন্দা। আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি রয়েছেন তিনি। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ওই রোগী। পরে চিকিৎসার খরচ চালাতে না পেরে রবিবার রাতে আলিপুরদুয়ার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন।
জেলা সদর হাসপাতালের সুপার পরিতোষ মণ্ডল বলেন, “ওই রোগী হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। সব রকম সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তাঁর চিকিৎসা করা হচ্ছে। এই রোগে শরীর ধীরে ধীরে অসার হয়ে যায়। এর আগে আমাদের জেলায় এই রোগে দুই জন আক্রান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে একজন ১৫ বছরের কিশোরও ছিল। আমরা প্রয়োজনীয় সতর্কতা জারি করেছি।” জেলা সদর হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ও বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “ওই রোগী জটিল গুলেনবারি সিনড্রোমে আক্রান্ত। শিলিগুড়িতে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে উনি সমস্যায় পড়েন। পরে জেলা সদর হাসপাতালে সিসিইউতে তাঁকে বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে সব পক্ষকে সচেতন করেছি।”
গুলেনবারির উপসর্গ কী? গুলেনবারি সিন্ড্রোম একটি জটিল স্নায়ুরোগ। হাঁটাচলার সমস্যাই এই রোগের প্রধান উপসর্গ। পা দুর্বল লাগে। ধীরে ধীরে শরীরের উপরের অংশ অসার হয়ে যায়। পরে সারা শরীর অবশ হয়ে যায়। অনেকটা প্যারালাইসিসের মতো। ধীরে ধীরে শরীরের ঊর্ধ্বাঙ্গ অকেজো হতে শুরু করে। গুলেনবারি সিনড্রোম বা জিবিএসে আক্রান্ত হলে পঙ্গাঘাতও হতে পারে। শ্বাস নেওয়ার হার বেড়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে সমস্যা হলেও গুলেনবারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তির আঙুল এবং পায়ের তলায় জ্বালা অনুভব হতে পারে। যাঁরা গুলেনবারি সিনড্রোমে আক্রান্ত তাঁদের ধীরে ধীরে মুখ বেঁকে যেতে পারে। আক্রান্তর কথাও জড়িয়ে যেতে পারে। রক্তচাপ অত্যাধিক হারে বেড়ে যাওয়া গুলেনবারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষ্মণ। তাই শারীরিক দুর্বলতা, হাঁটাচলায় সমস্যা অনুভব করলেই রক্তচাপ পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এর ফলে প্রস্রাবে জ্বালা, এমনকী বারবার সংক্রমণজনিত সমস্যাতেও ভুগতে হতে পারে। হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।