আন্দোলন চলবে, SSC চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকের পর জানালেন ‘যোগ্য়’ চাকরিহারারা!
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
সোমবারের পর মঙ্গলবার ফের -এর চেয়ার সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক করলেন চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষকরা। এদিনের বৈঠকের পর তাঁর সাফ জানিয়ে দিলেন, আপাতত আন্দোলনের রাস্তা থেকে সরছেন না। তেমন কোনও পরিকল্পনা তাঁদের নেই।
একইসঙ্গে চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষকদের হুঁশিয়ারি, তাঁরা যাতে তাঁদের অবসর নেওয়ার বয়সের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত সসম্মানে নিজেদের চাকরি করে যেতে পারেন, সেটা এসএসসি, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, রাজ্য শিক্ষা দফতর এবং সর্বোপরি রাজ্য সরকারকে যেকোনও মূল্যে নিশ্চিত করতেই হবে।
এদিন সন্ধের বৈঠকের পর এসএসসি কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতিনিধিরা বেরিয়ে এসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। তাঁরা স্পষ্ট জানান, তাঁরা একাধিক বিষয়ে স্পষ্ট করতে চেয়েছিলেন। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে এসএসসি চেয়ারম্য়ানের সঙ্গে কথা হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের এক প্রতিনিধি বলেন, 'ডিআই অফিসের থেকে নোটিফিকেশন দেওয়া হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, যাঁরা দাগী নন, তাঁদের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন দেওয়া হোক আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ অবধি। কিন্তু, তাঁরা কারা? তাঁদের একটা লিস্ট তো পাঠানো হয়েছে। আমরা সেই লিস্ট জানি না। সেটার ক্ল্যারিফিকেশনের জন্যই আমরা গিয়েছিলাম।'
বিষয়টি নিয়ে এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হলেও সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট হতে পারেননি আন্দোলনকারীরা। তাঁদের প্রতিনিধি জানান, 'আজ বললেন , সমস্ত যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা, তাঁরা স্যালারি পাবেন ও স্কুলে যেতে পারবেন। কোনও কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন নেই। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। আমরা এতে একদমই সন্তুষ্ট নই। কারণ, আমরা কি শুধুমাত্র ওই আটমাস বেতন নেব? তারপর আমাদের তাড়িয়ে দেবে, এটা তো হতে পারে না।'
যদিও আন্দোলনকারীরা এও জানান, প্রাথমিক একটা স্বস্তি পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু, সেটাই তো সব নয়। তাই আন্দোলন চলবে। তাঁদের বক্তব্য, 'একটা প্রাথমিক সমাধানে অবশ্যই এসেছি। একটা টেনশন ছিল, সেটা একটু দূর হল। আমাদের আদতে কোর্টে জিততে হবে। চাকরিতে পুনর্বহাল হতে হবে। ইতিমধ্য়েই শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, রিভিউয়ের আগে যোগ্য অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করা হবে না। তাই চেয়ারম্যান স্যার ওই বক্তব্যের মধ্যে ঢুকতে পারেননি। এই বিষয়ে আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছেই ক্ল্যারিফিকেশন চাইব। আমরা ওটা না পেলে এই রাস্তার আন্দোলন ছাড়ছি না, ছাড়ব না।'
প্রসঙ্গত, বুধবার ওএমআর প্রকাশ নিয়ে আদালতে একটি মামলার শুনানি আছে। আন্দোলনকারীরা সেদিকেও নজর রাখবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, 'ওএমআর প্রকাশ করা নিয়ে কাল ডিভিশন বেঞ্চে মামলা আছে। সেখানে এসএসসি চেয়ারম্যান সশরীরে অথবা ভার্চুয়াল হাজিরা দেবেন। আমরাও সেই শুনানির দিকে তাকিয়ে আছি। কিন্তু আমাদের দাবি ওমএমআর প্রকাশ এবং যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতেই হবে।'
এরইসঙ্গে ফের একবার দাগী শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের অবিলম্বে বরখাস্ত করারও দাবি তুলেছেন 'যোগ্য' চাকরিহারারা। এই বিষয়ে তাঁদের অবস্থান হল - 'দাগীদের যাতে অবিলম্বে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়, আগামিকাল সেই দাবি নিয়ে আমরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে যাব। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও যোগাযোগ করব, জানতে চাইব - কেন রিভিউয়ের আগে যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা যাবে না।'
আন্দোলনকারীদের আরও বক্তব্য হল, আজ তাঁদের যে পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে, তার জন্য় তাঁরা দায়ী নন। তাই যাঁরা এই পুরো ব্যবস্থাপনা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে, তাদের সকলকেই যেকোনও মূল্যে যোগ্য চাকরিহারাদের নিয়োগ ও সম্মান যেকোনও মূল্যে ফিরিয়ে দিতেই হবে।