• শহরে ২ কোটি ৩২ লক্ষ ব্যয়ে স্ট্রিট লাইট
    বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: ‘রাজার শহর’ কোচবিহারকে হেরিটেজ শহর হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। শহর ঘিরে সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে সন্ধ্যা নামলেই কোচবিহার পুর এলাকায় বহু রাস্তা পথবাতির অভাবে অন্ধকার হয়ে থাকছে। বিশেষ করে শহরের বাঁধ রোডের বিস্তীর্ণ এলাকায় কোনও পথবাতিই নেই। ফলে এই রাস্তাটি সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায়। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি দিয়ে দিনের মতো রাতের বেলাতেও প্রচুর মানুষ চলাচল করে। এই পরিস্থিতিতে কোচবিহার পুরসভা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় পথবাতি লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে। শহরে মোট ২ কোটি ৩২ লক্ষ টাকার স্ট্রিট লাইট লাগানোর জন্য পুর কর্তৃপক্ষ টেন্ডার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। 

    বাঁধরোডে আলো না থাকার কারণে যেমন লোকজনের চলাচলে সমস্যা হয় তেমনই এলাকায় অসামাজিক কাজকর্মও চলে। বিশেষ করে বাঁধ রোডের ধারে কয়েকটি জায়গায় মাদকাসক্তদের নেশার আসর বসে। মাদক কারবারিদেও ঠেক রয়েছে। সাগরদিঘির পারেও পর্যাপ্ত আলো না থাকার কারণে রাতে অন্ধকার হয়ে থাকে। 

    কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, শহরের বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে পথবাতি লাগানোর জন্য আমরা টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। নতুন করে কিছু জায়গাও চিহ্নিত করা হয়েছে। যেসব এলাকায় পথবাতি নেই সেসব জায়গায় পথবাতি লাগানো হবে। টিউবের পরিবর্তে এলইডি লাইট লাগানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। 

    কোচবিহারের তোর্সার বাঁধটি শহরের খাগড়াবাড়ি এলাকা থেকে শুরু করে হরিণচওড়া পর্যন্ত গিয়েছে। কয়েক কিমি লম্বা এই রাস্তার মধ্যে পুরসভার ১, ১৫, ১৬, ১৯ সহ আরও কয়েকটি ওয়ার্ড পড়ে। একদিকে তোর্সা নদী, অন্যদিকে তোর্সার বাঁধ। মাঝের অংশে অনেক জায়গায় আবার নদীর ধার ও চরের মধ্যে বসতি রয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার মানুষের বাস। তাঁরা ওই বাঁধ রাস্তা পারাপার করেই যাতায়াত করেন। ফলে সন্ধ্যা নামতেই এলাকাগুলি আলো-আঁধারি হয়ে যায়। শহরের বিভিন্ন অংশের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। যাঁরা কোচবিহার শহরকে বাইপাস করে পুণ্ডিবাড়ি বা ঘুঘুমারির দিকে যেতে চান তাঁরাও এই বাঁধ রোডটিই ব্যবহার করেন। গ্রাম থেকে শহরে আসা একটা বিরাট সংখ্যক মানুষ তোর্সার সাঁকো পেরিয়ে শুকটাবাড়ি, মোয়ামারি সহ অন্যান্য এলাকায় রাতের বেলা ফিরে যায়। সকলকেই এই বাঁধ রোডে উঠে ফাঁসিরঘাট হয়ে যেতে হয়। 

    সামনেই বর্ষা। কোচবিহারের বর্ষা মানেই আকাশের খামখেয়ালি স্বভাব। কখনও ভারী বৃষ্টি, কখনও হালকা। রাতের বেলা এমনিতেই পথচারীদের যাতায়াতের যথেষ্ট সমস্যা হয়। তার উপরে শহরের অনেক রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো না থাকায় দুর্ভোগ চরমে ওঠে। এসব কথা চিন্তাভাবনা করেই পুরসভা পথবাতি লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে। পুরসভা জানিয়েছে, দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে সেই কাজ শুরু করবে। তবে কতদিনে সেই কাজ হবে সেটা অবশ্য এখনই নির্দিষ্ট করে পুরসভার তরফে জানানো হয়নি। তবে কাজটি বর্ষার আগে শেষ হলে তাঁদের সুবিধা হবে বলেই মনে করছেন বাসিন্দারা।
  • Link to this news (বর্তমান)