নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ‘ডার্ক স্পট’ নিয়ে বহুদিন ধরে উদ্বিগ্ন পুলিস। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাতেও সেই উদ্বেগ ধরা পড়েছে। সংশ্লিষ্ট স্পটগুলি অপরাধীদের ‘স্বর্গরাজ্য’-এ পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ। বিশেষ করে চুরি, ছিনতাই ক্রমবর্ধমান! তাই বিষয়টি নিয়ে আবার নড়েচড়ে বসেছে শিলিগুড়ি পুরসভাও। তারা নতুন করে শহরের পাঁচটি এলাকার অসংখ্য জায়গাকে ডার্ক স্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এজন্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে।
উত্তরবঙ্গ তো বটেই রাজ্যে বৃহত্তম শহরগুলির মধ্যে শিলিগুড়ি অন্যতম। উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার এই শহর। পাশেই প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল এবং প্রতিবেশী রাজ্য বিহার ও সিকিম। এমন ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য বছর খানেক আগে রাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চাঙ্গা করতে পুরসভার কাছে ডার্ক স্পটের তালিকা দিয়েছিল শিলিগুড়ি পুলিস কমিশনারেট। এরপর রাতের আলো ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করেন এনবিইউ’র ভূগোল বিভাগের গবেষক শুভম রায়। তাঁর গবেষণাপত্রে উল্লেখ রয়েছে শহরের ‘ডার্ক স্পট’ বা অন্ধকারাচ্ছন্না জায়গাগুলিতে চুরি ও সিঁধেল চুরির ঘটনা ঘটছে।
এরপরই পুরসভা ফের সমীক্ষা করে নতুন কিছু ডার্ক স্পট চিহ্নিত করেছে। পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য কমল আগরওয়াল বলেন, সমীক্ষা রিপোর্ট অনুসারে নিবেদিতা রোড, গুরুংবস্তি, শালুগাড়ায় ৪১, ৪২ ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু রাস্তা, বর্ধমান রোডের একাংশ, দার্জিলিং মোড় থেকে ভক্তিনগর থানা, চম্পাসরির কিছু অংশ ডার্ক স্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যারমধ্যে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ এবং বর্ধমান রোডে উড়ালপুলের কাজ চলায় ওই এলাকাগুলি আলো আঁধারি হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি থেকে বাতিস্তম্ভ সরানো হয়েছে। শীঘ্রই পুরসভায় আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে আলোর ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের গবেষকের সঙ্গেও কথা হয়েছে। সেখান থেকে এ ব্যাপারে আরও কিছু বিস্তারিত তথ্য মিলবে।
এদিকে, বছর খানেক আগে শিলিগুড়ি পুলিসের চিহ্নিত করা সমস্ত ডার্ক স্পটে এখনও বসেনি বাতিস্তম্ভ। পুলিসের একাংশের পাশাপাশি শহরের নাগরিকরা এনিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ। নাগরিকদের অভিযোগ, সন্ধ্যা নামলেই তিনবাত্তি, নৌকাঘাট, বর্ধমান রোড, মোহন বাগান লেন, দশরথপল্লি, ভানুনগর প্রভৃতি এলাকা দিয়ে চলাচল করতে গা ছমছম করে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে পথচারীর গলার চেন, মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে বাইকে চম্পট দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা।
বিদ্যুৎ বিভাগের এমআইসি অবশ্য বলেন, পুলিসের তালিকা অনুসারে পারিজাত মূর্তি থেকে রায় কলোনি পর্যন্ত এলইডি লাইটের ২৪টি বাতিস্তম্ভ, জলপাই মোড় থেকে নৌকাঘাট পর্যন্ত ৩২টি বাতিস্তম্ভ বসানো হয়েছে। নৌকাঘাট থেকে তিনবাত্তিতে ৩০টি বাতিস্তম্ভ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। তিনবাত্তি থেকে উত্তরকন্যার কাছে এনএইচপিসি’র অফিস পর্যন্ত অংশে বাতিস্তম্ভ বসানো হবে।