• উপস্থিতি নগণ্য, হরিরামপুর কলেজমুখী হচ্ছেন না ছাত্রছাত্রীরা, বাড়ছে ড্রপআউট
    বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, গঙ্গারামপুর: ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার তলানিতে। এর জেরে হরিরামপুর কলেজে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিষয় ভিত্তিক ক্লাস। কলেজমুখী হচ্ছেন না পড়ুয়ারা। নতুন শিক্ষানীতি লাগু হওয়ায় এখন থেকে ৪ বছরে শেষ হবে বিষয় ভিত্তিক অনার্স। আর এতেই যেন অনীহা কাজ করছে কলেজ পড়ুয়াদের একাংশের মধ্যে।

    হরিরামপুর দেওয়ান আব্দুল গনি কলেজে ক্লাস হয় না বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। কিন্তু, বাস্তবটা উল্টো। কলেজে শিক্ষকরা উপস্থিত হলেও ছাত্রছাত্রীর অভাবে অনেক বিভাগের ক্লাস নিয়মিত হয় না। সারাদিনে মেরেকেটে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ৫০ থেকে ১০০জন। কলেজে কলা বিভাগ ও বিজ্ঞান বিভাগ মিলিয়ে ১৫টি বিষয়ে পড়ানো হয়। 

    সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, পড়ুয়ারা শুধুমাত্র স্কলারশিপের টাকা তুলতেই কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হচ্ছে। বাড়ছে কলেজে ড্রপআউটের সংখ্যা। সেমেস্টার ভিত্তিক পরীক্ষায় প্রজেক্ট জমা করে গেলেও প্রজেক্ট সিটে সই করতেও কলেজমুখী হচ্ছেন না পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের ফোন করে ডেকেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ কলেজ কৰ্তৃপক্ষের। কলেজের একাংশ শিক্ষকদের অভিযোগ, সাধারণভাবে স্নাতকের ডিগ্রি নিতে চাইছে না একাংশ পড়ুয়া। কলেজে নাম মাত্র ভর্তি হলেও ঝুঁকছে কর্মমুখী কোর্সের দিকে। যাতে খুব সহজেই কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়ে ওঠে। কলেজে ছাত্রী রয়েছে ৬৫ শতাংশ, ৩৫ শতাংশ রয়েছে ছাত্র। কলেজে ভর্তি হয়ে প্রত্যেকটি বর্ষের একাংশ ছাত্র ভিনরাজ্যে কাজ করছেন। নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষাও দিচ্ছেন। বেশিরভাগই ড্রপআউট হয়ে যাচ্ছেন। পড়ুয়া না আশায় অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকছে ক্লাস রুম।  সব মিলিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের। 

    এই ব্যাপারে হরিরামপুর কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, কলেজে পড়ুয়াদের উপস্থিতির সংখ্যা দিনদিন কমছে। যার কারণে বিষয়টি আমাদের ভাবিয়েছে। আমরা খুব দ্রুত সমস্যা সমাধানের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করে সমাধানে পৌঁছতে চাইছি। এলাকার অর্থ সামাজিক অবস্থা ভালো না থাকায় অনেকে কলেজে ভর্তি হলেও পারিবারিক সমস্যার কারণে ভিনরাজ্যে কাজ করছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। পড়ুয়ারা যাতে কলেজে পঠনপাঠন করে, লাইব্রেরির ব্যবহার করে সে বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন করা হবে। 

    অনেকেই রসিকতা করে বলেন, ক্লাসে ভিড় হোক বা না হোক, কলেজের ক্যান্টিনে ১০০ শতাংশ অ্যাটেনডেন্স থাকে। কিন্তু পড়ুয়ারা কলেজমুখী না হওয়ায় প্রভাব পড়েছে হরিরামপুর কলেজের ক্যান্টিনের ব্যবসাতেও। হরিরামপুর কলেজ ক্যান্টিনের মালিক অমল আচার্য্য বলেন, কলেজে পড়ুয়ার সংখ্যা মেরেকেটে ৫০ জন হয়। ব্যবসা লাটে উঠে গিয়েছে। একমাত্র পড়ুয়াদের দেখা পাওয়া যায় পরীক্ষার সময়। ক্যান্টিনের দায়িত্ব নিয়ে কিভাবে আমার সংসার চলবে সেটাই বুঝতে পারছি না।   বন্ধ হরিরামপুর কলেজের ক্লাসরুম - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)