• চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা কাজে যোগ না দেওয়ায় বিপাকে স্কুলগুলি
    বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাজে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট কিছুটা ছাড় দেওয়ায় বাঁকুড়ার স্কুলগুলিতে স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু, কলকাতায় আন্দোলন করতে শিক্ষকরা চলে যাওয়ায় স্কুলগুলি বিপাকে পড়েছে। বিশেষ করে চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রথম ইউনিট টেস্টের রাশি রাশি খাতা কে দেখবে, তা নিয়ে প্রধান শিক্ষকরা আতান্তরে পড়েছেন। ‘সিঙ্গেল টিচার’ বিষয়গুলি নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে বাঁকুড়া শহর থেকে জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত বিদ্যালয়ের চিত্র মোটামুটি একই। উল্লেখ্য, বাঁকুড়া জেলার স্কুলগুলিতে গত ১ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রথম ইউনিট টেস্ট  হয়। জেলার লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষাপর্ব কোনওরকমে মিটলেও সময়ে ফলপ্রকাশ করা নিয়ে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে।  এব্যাপারে বাঁকুড়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) পীযূষকান্তি বেরা বলেন, শিক্ষকের ঘাটতির জন্য সমস্যার বিষয়টি আমরা জানি। মৌখিকভাবে ইউনিট টেস্টের খাতা দেখার সমস্যার কথাও কয়েকজন প্রধান শিক্ষক আমাদের জানিয়েছেন। তবে এব্যাপারে লিখিতভাবে কেউ জেলা স্কুল শিক্ষাদপ্তরকে জানাননি। আমরা সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। 

    বাঁকুড়া গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুমনা ঘোষ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষিকার চাকরি গিয়েছে। তারমধ্যে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন বিভাগে মাত্র একজন শিক্ষিকাই ছিলেন। তিনিও চাকরিহারা হয়েছেন। আদালতের নতুন নির্দেশিকায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষিকারা বিদ্যালয়ে আসবেন বলে আমরা আশা করেছিলাম। কিন্তু, তাঁরা স্কুলে আসছেন না। ফলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ওই চার শিক্ষিকা ইউনিট টেস্টের খাতা দেখতেন। তাঁদের খাতা কারা দেখবেন, তা জানা নেই।   

    জঙ্গলমহলের অন্যতম ব্লক রানিবাঁধের অন্তর্গত ঝিলিমিলি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অসিতবরণ মাহাত বলেন, আমাদের স্কুলে মোট ২৫ জনের মধ্যে ন’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা  চাকরি গিয়েছে। আদালত ফের কাজে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়ায় আমরা আশার আলো দেখছিলাম। কিন্তু, চাকরিহারারা কলকাতায় আন্দোলনে চলে যাওয়ায় কাজে যোগ দেননি। ফলে সমস্যা যে তিমিরে ছিল, সেখানেই রয়ে গিয়েছে। 

    তিনি আরও বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, এডুকেশন ও সাঁওতালি ভাষায় কোনও শিক্ষক বর্তমানে নেই। সাঁওতালি বিষয়ের ইউনিট টেস্টের খাতা বিএড-এর প্রশিক্ষণ নেওয়া ছাত্রদের দিয়ে দেখানো হয়েছে। তাঁরাই খাতার মূল্যায়ন করেছেন। দ্রুত চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকরা কাজে যোগ না দিলে সমস্যা আরও বাড়বে। 
  • Link to this news (বর্তমান)