ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা, মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধান কাটা শুরু চাষিদের
বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, বহরমপুর: প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় উদ্বিগ্ন চাষিরা বোরো ধান কাটতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। মঙ্গলবার সকালে মেঘের মুখভার দেখেই কার্যত চাষিরা ধান কাটতে শুরু করে দিয়েছেন। চাষিদের দাবি, কালবৈশাখী ঝড় হলেই পাকা ধানের সিংহভাগ ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি এই সময় শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও বেশি থাকে। সঙ্গে বৃষ্টির আশঙ্কা তো রয়েছে। আতঙ্কে পাকা ধান জমিতে ফেলে না রেখে চাষিরা কাস্তে হাতে জমিতে নেমেছেন। গত বৃহস্পতি, শুক্রবারের কালবৈশাখী ঝড় বৃষ্টির পর থেকেই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে অধিকাংশ চাষিই ধান কাটতে মাঠে নেমেছেন।
মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়। বোরো চাষে বিঘা প্রতি ১১-১২ কুইন্টাল হারে ধানের ফলন হয়। যা আমন চাষের ফলন অপেক্ষা অনেক বেশি। আলু তুলে সেই জমিতে বহু চাষি আগাম মিহি ধানের চাষ করেন। পাশাপাশি বিল এলাকায় আগাম বোরো চাষ হয়। মিহি ধানের ফলন অপেক্ষাকৃত কম হয়। নয়নমণি, মল্লিকা, শতাব্দী জাতীয় মিহি ধান পাকতে শুরু করেছে। এই ধান নির্বিঘ্নে ঘরে তুলতেই প্রতিবছর চাষিদের উদ্বেগ বাড়ে। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দু’দিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। কোনও কোনও এলাকায় কালবৈশাখী ঝড়ও হয়েছে। জমির মাটি শুকোতেই চাষিদের ব্যস্ততা বেড়্বছে। সোমবার থেকে বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ বেড়েছে। যারফলে গুমোট আবহাওয়ায় চাষিরা ঝড় বৃষ্টির আশঙ্কা বেশি করতে শুরু করেছেন। ফলে পাকা ধান জমিতে ফেলে রাখতে কেউ ঝুঁকি নিচ্ছেন না। মঙ্গলবার সকালে মেঘলা আকাশ থাকায় দেরিতে সূর্যের মুখ দেখা গিয়েছে। আকাশের অবস্থা দেখে চাষিরা ধান কাটতে কালবিলম্ব করেননি।
বড়ঞা ব্লকের পাড়শালিকার ধান চাষি নিরঞ্জন ঘোষ বলেন, আকাশের পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয়। যেকোনওদিন কালবৈশাখী ঝড় বৃষ্টি আছড়ে পড়তে পারে। সবদিক ভেবে মঙ্গলবার থেকেই ধান কাটতে শুরু করেছি। গোকর্ণ এলাকার ধান চাষি নিজামুদ্দিন শেখ বলেন, বোরো ধান ঘরে তোলার আগে প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে কিছু না কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়। এবার ক্ষয়ক্ষতির আগেই ফসল তুলে বাড়িতে ধানের গোলা ভরতে মাঠে নেমেছি।