আরএমও নেই, ভিজিটের সময় ডাক্তার ‘ভাড়া’ করা নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ
বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: চণ্ডীপুরের একটি নার্সিংহোমে ভিজিটের সময় পাশের নার্সিংহোম থেকে ধরে আনা হল এক চিকিৎসককে। অথচ ডাক্তারদের নিয়োগপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। নার্সদের ডিউটি রোস্টার বলেও কিছু নেই। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের স্বাস্থ্যসাথী সেলের অফিসার ইনচার্জ গত ৮এপ্রিল চণ্ডীপুরে একটি নার্সিংহোমে ভিজিট এরকম ভূরিভূরি অনিয়ম প্রত্যক্ষ করলেন। তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি দিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক(জেলা পরিষদ) অনির্বাণ কোলে। তিনি সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
অতিরিক্ত জেলাশাসক(জেলা পরিষদ) বলেন, ওই নার্সিংহোমে বেশকিছু অনিয়ম লক্ষ্য করা গিয়েছে। নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচকে ব্যবস্থা নিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, চণ্ডীপুরের বাসিন্দা সুপ্রভাত পাত্র চণ্ডীপুরে এড়াশাল গ্রামীণ হাসপাতাল সংলগ্ন একটি নার্সিংহোমের বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে স্বাস্থ্যভবন থেকে জেলাশাসক এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার(আরএমও) রাখা হয় না বলে অভিযোগ। এছাড়াও আরও বহু অভিযোগ উল্লেখ করেছিলেন। তার ভিত্তিতে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার ডেপুটি সিএমওএইচ-৩ সৌম্যজিৎ পুরকাইতের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী সেল থেকেই আলাদা তদন্ত হয়। গত ৮এপ্রিল সিএমওএইচ অফিস এবং স্বাস্থ্যসাথী সেলের পক্ষ থেকে জোড়া টিম ওই নার্সিংহোমে পৌঁছে যায়। সেসময় নার্সিংহোমে আরএমওর দেখা পাওয়া যায়নি। তড়িঘড়ি পাশের একটি নার্সিংহোম থেকে একজন ডাক্তার আনা হয়েছিল। ডাক্তারদের জয়েনিং লেটার নেই। নার্সিং স্টাফদের হাজিরা এবং রোস্টার ডিউটি দেখাতে ব্যর্থ হয় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ মগরাজপুরে রেলওয়ে ওভারব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় একটি নার্সিং কলেজ চালু করেছে। সেখানকার পরিকাঠামো নিয়েও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। সেখানেও হানা দিয়েছিল তদন্ত কমিটি। একইভাবে সেখানেও বেহাল পরিকাঠামোর ছবি ওঠে এসেছে। নার্সিংহোমের নামে ফায়ার লাইসেন্স নেই। বিল্ডিং প্ল্যানের কপিও দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে নার্সিং কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ওই নার্সিংহোম ও নার্সিং কলেজের কর্ণধার তাপসকুমার বেরা বলেন, ভিজিটের সময় আমাদের আরএমও নার্সিংহোমে ছিলেন। তিনি বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আসলে চণ্ডীপুরের এক ব্যক্তি আমাদের নার্সিংহোম নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চিঠি পাঠিয়ে অনর্থক ঝামেলা করে যাচ্ছেন। আমরা সমস্ত নথি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে পাঠিয়ে দেব। নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ অসিত দেওয়ান বলেন, অতিরিক্ত জেলাশাসক একটি চিঠি দিয়েছেন।
সেইমতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অভিযোগকারী সুপ্রভাত পাত্র বলেন, ন্যূনতম পরিকাঠামো ছাড়াই কীভাবে নার্সিংহোম চলছে সেটা সবার সামনে তুলে ধরতে চিঠি দিয়েছিলাম। তদন্তে আমার তোলা অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চিকিৎসার নামে মানুষের জীবন নিয়ে খেলা হচ্ছে। এছাড়াও আরও অনেক অভিযোগ আছে।