নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কোন কোন এলাকায় (এরিয়া ইউনিট বা ডিভিশন) মিউটেশন-অ্যাসেসমেন্টের কতগুলি ফাইল বাকি পড়ে রয়েছে?
এবার তার তালিকা তৈরির নির্দেশ দিল কলকাতা পুরসভা। সম্পত্তি কর মূল্যায়ন ও রাজস্ব আদায় বিভাগের প্রতিটি এরিয়া ইউনিটের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের দ্রুত তালিকা তৈরি করে ফাইলের মীমাংসা করতে বলা হয়েছে। মিউটেশন নিয়ে নাগরিক হয়রানি দূর করতেই এই উদ্যোগ বলে দাবি। পাশাপাশি বকেয়া মিউটেশন এক লপ্তে করা গেলে মোটা টাকা রাজস্ব আদায় হবে। পাশাপাশি দিনের পর দিন ধরে মিউটেশনের চক্করে হয়রান পুর নাগরিকরাও স্বস্তি পাবেন।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে শহরে ফের ‘দুয়ারে কেএমসি’ শিবির শুরু হয়েছে। করের আওতার বাইরে থাকা জমি-বাড়ি অ্যাসেসমেন্ট থেকে শুরু করে সম্পত্তিকর সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ক্যাম্প হচ্ছে। সংযুক্ত এলাকা অর্থাৎ যাদবপুর, বেহালা, জোকা ও গার্ডেনরিচে ক্যাম্প চলছে। পাশাপাশি সংযুক্ত এলাকার বাইরে উত্তর কলকাতার কিছু অঞ্চলে চলতি মাসে ক্যাম্প হয়।
ওয়ার্ড ধরে ধরে সম্পত্তি করের আওতার বাইরে থাকা বাড়ি, জমি, কারখানা চিহ্নিত করে তা অ্যাসেসমেন্ট করতে হবে। কোনও সম্পত্তি যেন আনঅ্যাসেসড না থাকে খেয়াল রাখতে হবে। একইসঙ্গে সম্পত্তিকর মূল্যায়ন এবং মিউটেশন করতে হবে-সম্প্রতি আধিকারিকদের এই নির্দেশ দিয়েছিলেন মেয়র। তিনি বলেন, শহরের সংযুক্ত অঞ্চলের অনেক সম্পত্তি করের আওতাভুক্ত নয়। মিউটেশন হয়নি। তাছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রেও মিউটেশনের বহু ফাইল নানা কারণে পড়ে থাকে। সেগুলি দ্রুত নিস্পত্তি করতে হবে। এ কাজ করতে পারলে রাজস্ব বৃদ্ধি হবে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। এই নির্দেশের পর তৎপরতা শুরু হয়। শিবিরের পাশাপাশি বকেয়া পড়ে থাকা মিউটেশনের দ্রুত নিস্পত্তির তোড়জোড়ও শুরু হয়।
পুরসভার সম্পত্তি কর বিভাগ আটটি (উত্তর, দক্ষিণ, যাদবপুরে দু’টি, টালি ট্যাক্স, বেহালা, জোকা ও গার্ডেনরিচ) ডিভিশন বা এরিয়া ইউনিটে বিভক্ত। পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, বহু বছর ধরেই ‘ওয়ান ডে মিউটেশন’ সিস্টেম চালু রয়েছে। কিন্তু আগে এই কাজ দ্রুত হতো না। কোনও একদিনের হিসেব যদি দেখা যায়, তাহলে এক-একটি এরিয়া ইউনিটে গড়ে ১৫০ থেকে ১৮০টি মিউটেশনের ফাইল পড়ে থাকত। কিন্তু এখন মিউটেশনের ফাইল ছাড়ার কাজ অনেক দ্রুত হয়। এখন দিনে গড়ে অন্তত প্রায় ৩৫টি ফাইলের মীমাংসা হচ্ছে। কিন্তু কোনও একদিনের হিসেব ধরলে গড়ে বিভিন্ন এরিয়া ইউনিটে ১০ থেকে ১৫টি, কোথাও ২০ থেকে ২৫টি ফাইল পড়ে থাকছে। মেয়র চাইছেন সেইটুকুও যাতে পড়ে না থাকে। কোনও আইনি বা অন্যান্য জটিলতা থাকলে অবশ্য আলাদা বিষয়। তার বাইরে যে সম্পত্তির মিউটেশনের ক্ষেত্রে নথিপত্রগত কোনও খামতি নেই, সেগুলি যত সম্ভব দ্রুত ছাড়ার নির্দেশ।