পাথুরিয়াঘাটায় অগ্নিকাণ্ড: বাড়ি মালিক সহ ২ জনের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা পুলিসের
বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রবিবার রাত ১টা নাগাদ আগুন লাগে পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের একটি ‘কমার্শিয়াল বিল্ডিং’-এর চারতলার কাপড়ের গুদামে। আগুন ও ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা যান পাশের ঘরে থাকা দুই ব্যক্তি।
সেই ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে এবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল জোড়াবাগান থানার পুলিস। লালবাজার জানিয়েছে, ওই বাড়ি এবং কাপড়ের গুদামে অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থাই
ছিল না। সেই কারণে ওই বাড়িটির মালিক ও কাপড়ের গুদামের মালিকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিস।
রবিবার গভীর রাতে আগুন লাগায় বিল্ডিংয়ের ভিতরে সেই সময় যাঁরা ছিলেন, তাঁরা আটকে পড়েন। ঘটনাস্থল যথেষ্ট ঘিঞ্জি
হওয়ায় দমকলের গাড়ি ঢুকতেও প্রাথমিকভাবে কিছু সমস্যা হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে যথেষ্ট
বেগ পেতে হয় দমকলকর্মীদের। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার সকাল হয়ে যায়। সুনীলকুমার শর্মা (৪৮) ও কিষাণলাল উপাধ্যায় (৫৮) নামে দু’জন মারা যান। রাজস্থানের
বাসিন্দা এই দু’জন বন্ধু ছিলেন। কলকাতায় বেড়াতে এসে সুনীলের ভাড়া নেওয়া ঘরে উঠেছিলেন কিষাণলাল।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সোমবার সন্ধ্যায় দমকল বিভাগের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়ে জোড়াবাগান থানায়। সূত্রের খবর, দমকল জানিয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা নেই। অথচ বাণিজ্যিক উদ্দেশে ব্যবহৃত কোনও বাড়ির ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। দমকলের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাড়িটি যখন তৈরি হয়েছিল, তখন দমকলের ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীকালে সেটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। পুনরায় অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়নি। ফলে গুদামে অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনাও সম্ভব হয়নি। কাপড়ের গুদামের মালিকও চারতলায় আগুন নেভানোর জন্য কোনও আপৎকালীন ব্যবস্থা রাখেননি। তাই বাড়ির মালির ও গুদামের মালিক, দু’জনের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখতে যান ফরেন্সিক বিভাগের আধিকারিকরা। অগ্নিকাণ্ডের
উৎসস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। দমকলের রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই জোড়াবাগান থানার পুলিসের তরফে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হয়েছে।