• নেতাজিনগর কাণ্ড: সম্পর্ক ভাঙবে? ভাগ্নিকেও খুনের ছক ছিল মামার
    বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ৭ বছরের নাতি ও অন্তঃসত্ত্বা নাতনিকে পুড়িয়ে মারার পরও আক্রোশ মেটেনি। যাঁর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক, সেই ভাগ্নিকেও খুন করতে চেয়েছিল মামা স্বপন বসাক। নেতাজিনগরে হাড়হিম হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর উত্তর দিনাজপুরে পালিয়ে গিয়ে সেই ছকই কষছিল অভিযুক্ত স্বপন। শ্রীঘরে পুলিসি জেরায় এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে সে। 

    গত ১০ এপ্রিল দুপুরে নেতাজিনগরের শ্রীপল্লির বাড়িতে ভাগ্নির অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে নমিতা বসাকের মাথায় আঘাত করে খুন করে স্বপন। এরপরে ওই ঘরেই নমিতা ও জীবন্ত অবস্থায় নাতিকে সে পুড়িয়ে মারে বলে অভিযোগ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, শ্রীপল্লির বাড়ি থেকে বেরিয়ে অটো ধরে রানিকুঠি মোড়ে যায় স্বপন। তারপর বাস ধরে হাওড়া স্টেশন। সেখান থেকে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের ট্রেন ধরে সে। স্বপন জানত যে পুলিস তার মোবাইল নম্বরের লোকেশন ‘ট্র্যাক’ করে ধাওয়া করবে। তাই ট্রেনেই মোবাইল ‘সুইচড অফ’ করে দেয় সে। শেষমেশ বিভিন্ন প্রযুক্তি ও স্থানীয় সোর্স কাজে লাগিয়ে স্বপনকে পাকড়াও করে নেতাজিনগর থানার পুলিস। গ্রেপ্তারের পর পুলিস ধৃতের পরবর্তী প্ল্যান জানতে পারে। তদন্তকারীদের দাবি, অভিযুক্ত জেরায় জানিয়েছে যে বছর দেড়েক আগে নমিতার বিয়ের পরই ভাগ্নির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায় সে। কয়েকমাস আগে মায়ের সঙ্গে মামাদাদুর সম্পর্কের কথা জানতে পারেন নমিতা। এনিয়ে তাঁর সঙ্গে মামার বচসাও হয়। দিনের পর দিন এনিয়ে অশান্তির কারণে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন নমিতার মা। তখনই খুনের ছক কষে স্বপন। অভিযুক্ত পুলিসকে জানিয়েছে, রায়গঞ্জ থেকে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করে ফেলেছিল সে। নেপালের এক ঘনিষ্ঠের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিল স্বপন। সেখান থেকে কলকাতায় ফিরে ভাগ্নিকেও শ্বাসরোধ করে খুনের পরিকল্পনা চলছিল। কেন এমন পরিকল্পনা? পুলিসের কাছে অভিযুক্তের দাবি, স্ত্রীর মৃত্যুর পর সম্পর্কে জড়ানোর প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন ভাগ্নি। কিন্তু এখন সেই সম্পর্ক থেকে বেরনোর চেষ্টা করছিলেন বলেই নাতনি নমিতার বিরুদ্ধে রাগে ফুঁসছিল স্বপন। সেই আক্রোশ থেকেই খুনের পরিকল্পনা। পুলিসের দাবি, অন্তঃসত্ত্বা নাতনি ও সাত মাসের নাতিকে খুন করলেও ধৃতের মধ্যে কোনও অনুতাপ নেই। জেরায় তার বক্তব্য, ‘যা করেছি, তার জন্য আর কী হবে। বড়জোড় ফাঁসি।’
  • Link to this news (বর্তমান)