নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: জনবহুল পাড়ার ভিতর সরু গলি। ঢালাই রাস্তা। তার ধারে একফালি নিকাশি নালা। পিছনে পরিত্যক্ত জমি। সেই নালার পাশেই পড়েছিল কালো রঙের একটি ট্রলিব্যাগ। চেনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়েছিল কিছু চুল! তা দেখেই সন্দেহ হয়েছিল এলাকার বাসিন্দাদের। পুলিস এসে ট্রলিব্যাগ খুলতেই ভিতরে মিলল এক যুবতীর মৃতদেহ! মুখে সেলোটেপ! কলকাতার কুমোরটুলির পর মঙ্গলবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল বাগুইআটি থানার প্রতিবেশীপাড়া।
এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত যুবতীর নাম ও পরিচয় জানতে পারেনি পুলিস। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, যুবতীকে খুন করে জনবহুল এলাকায় কেউ বা কারা দেহ ফেলে দিয়ে গিয়েছে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তা খতিয়ে দেখে এক বা একাধিক অভিযুক্তকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। পাড়ার ভিতর থেকে দেহ উদ্ধার হওয়ায় কেউ গাড়িতে এসে তা ফেলে যায়নি বলেই অনুমান। পুলিসের ধারণা, বাইক বা রিকশতে চাপিয়ে সোমবার বেশি রাতে দেহ এখানে ফেলা হয়ে থাকতে পারে। স্থানীয়দের কয়েকজন নাকি রাতেই ওই ট্রলিব্যাগ দেখেও ছিলেন। কিন্তু রাতে ভালোভাবে কিছু বোঝা যায়নি। তাই আমলও দেননি তাঁরা। কিন্তু এদিন সকালে ট্রলিব্যাগটি পড়ে থাকতে দেখে এলাকার লোকজনের সন্দেহ হয়। কারণ, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কুমোরটুলি ঘাটে ট্রলিব্যাগের ভিতর থেকে এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছিল। মধ্যমগ্রামে খুন করে সেই মহিলার দেহ লোপাটের জন্য কলকাতার কুমোরটুলি গঙ্গার ঘাটে নিয়ে আসা হয়েছিল। স্থানীয়দের কথায়, ‘ওই ঘটনার কথা মাথায় রেখে আমরা পুলিসকে খবর দিই। তারা আসার পর বোঝা যায়, আমাদের অনুমান ভুল ছিল না।’ পুলিস জানিয়েছে, দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য আর জি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যুবতীর বয়স আনুমানিক ৩০-৩৫। পরণে ছিল হলুদ টপ। খুনের পর দেহটি দুমড়েমুচড়ে ট্রলিব্যাগে ভরা হয়েছে। শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে বলে অনুমান। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই কীভাবে খুন করা হয়েছে, তা স্পষ্ট হবে। খুনের আগে তাঁর উপর নির্যাতন করা হয়েছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ষড়যন্ত্র ও খুনের মামলা রুজু করেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। যুবতীর নাম ও পরিচয় জানতে বিধাননগরের সমস্ত থানা সহ বারাকপুর, হাওড়া কমিশনারেট এবং কলকাতা পুলিসকে মৃতদেহের ছবি পাঠানো হয়েছে। বিধাননগরের ডেপুটি পুলিস কমিশনার (এয়ারপোর্ট) ঐশ্বর্য সাগর বলেন, ‘তদন্ত শুরু হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ঘটনার কিনারা হয়নি’।