ডোমজুড়ের সেই অগ্নিদগ্ধ কারখানা নিয়মবিধি মানত? ধন্দে খোদ দমকল
বর্তমান | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: ডোমজুড়ের কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব নথি দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দমকল। কারখানায় অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা সহ উচ্চ দাহ্যের রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণ তৈরির ক্ষেত্রে নিয়মবিধি আদৌ মানা হতো কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন দমকলের আধিকারিকরা।
সোমবার দুপুরে ডোমজুড়ের দক্ষিণ ঝাঁপড়দহের একটি কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। একের পর এক বিস্ফোরণে আগুনের মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। দমকলের প্রায় ২০টি ইঞ্জিন মঙ্গলবার ভোররাত পর্যন্ত জল ও ফোম ছিটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে নেমে এদিন দমকলের তরফে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় নথিপত্র চাওয়া হয়। দমকল জানিয়েছে, ঘটনার অভিঘাতে ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ এতটাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত যে, কর্তারা এখনও কোনও কাগজ দেখাতে পারেননি। তবে ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষকে কিছুটা সময় দিয়েছে দমকল। হাওড়ার ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার রঞ্জনকুমার ঘোষ বলেন, ‘ওই কারখানার ভিতরে প্রচুর পরিমাণ উচ্চ দাহ্যের রাসায়নিক মজুত ছিল। অথচ অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা সেভাবে ছিল না। আগুন নেভানোর উপকরণ থাকলেও সেগুলি কতটা কাজ করত, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, রং শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল তৈরির জন্য যে ধরনের রাসায়নিক ছিল, তা সঠিকভাবে রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা সেখানে ছিল না। কারখানার ভিতরে বিশাল আকারের একাধিক বড় বড় কেমিক্যালের ফাঁকা ড্রাম রাখা ছিল। ওই ড্রামের ভিতরে গ্যাস জমে আগুনের সংস্পর্শে আসতেই সেগুলি পরপর বিস্ফোরণ হয়। নিরাপত্তা সংক্রান্ত সামান্য নিয়মবিধি মানা হতো না কারখানায়। ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে না পারলে দমকল কর্তৃপক্ষের উচিত, তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া, এমনটাই বলেছেন জগৎবল্লভপুরের বিধায়ক সীতানাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘যাতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হয়, তার জন্য আমি প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছি।’ সোমবার ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই কর জমা না দেওয়া নিয়ে ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান। ভুয়ো কাগজ ব্যবহার করে কিংবা কর ফাঁকি দিয়ে এই ধরনের কতগুলি কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি ডোমজুড় এলাকায় চলছে, তাও খতিয়ে দেখছে দমকল।