• ডোরাকাটা হায়না রক্ষা করতে তৎপর বন দপ্তর
    এই সময় | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • সুশান্ত বণিক, আসানসোল

    রানিগঞ্জ খনি এলাকায় ডোরাকাটা হায়না সংরক্ষণে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে বন দপ্তর। সম্প্রতি খনি শিল্পাঞ্চল জুড়ে একাধিক জায়গায় বেশ কিছু ডোরাকাটা হায়নার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

    এর পরেই বন দপ্তর একটি পশু কল্যাণকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজে নেমেছে। প্রাথমিক ভাবে আপাত নিরীহ ও পরিবেশবান্ধব এই পশুকে যেন কোনও ভাবেই হত্যা করা না–হয়, তা সুনিশ্চিত করতে প্রচারের কাজ শুরু হয়েছে।

    ডোরাকাটা হায়না নিশাচর এবং মৃতভোজী। স্থানীয় ভাষায় এরা ‘হুঁড়রা’ নামেও পরিচিত। এই প্রজাতির হায়না ভারতীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের প্রথম তালিকাভুক্ত বলে বন দপ্তর সুত্রে জানা গিয়েছে। তাই এদের রক্ষা করা প্রাথমিক দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন বন আধিকারিকরা। কিন্তু খনি শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ডোরাকাটা হায়নার মৃতদেহ উদ্ধারের পরে বন–আধিকারিক থেকে পশুপ্রেমীরা উদ্বিগ্ন এবং হতাশ।

    জানা গিয়েছে, চুরুলিয়া, জামুড়িয়া, দুর্গাপুরের আশপাশ থেকে এখনও পর্যন্ত চারটি ডোরাকাটা হায়নার দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহে আঘাতের চিহ্নও ছিল। বনকর্মীদের একাংশ ও পশুপ্রেমীদের ধারণা, এই হায়নাগুলিকে হত্যা করা হয়েছে।

    ফলে এই বিশেষ প্রজাতির প্রাণীকে রক্ষা করতে উঠে পড়ে লেগেছে বন দপ্তর। পশুকল্যাণের কাজে যুক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যৌথ ভাবে চুরুলিয়ায় সম্প্রতি একটি সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের ডিএফও অনুপম খান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত প্রচার করছি। এতে ভালো ফল হবে বলে বিশ্বাস রয়েছে।’

    বন দপ্তরের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে, পশ্চিম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া সামডি সগরভাঙ্গা এলাকায় এই প্রজাতির হায়না রয়েছে। চুরুলিয়াতে প্রায় পাঁচটি, সামডিতে দু’টি ডোরাকাটা হায়নার সন্ধান মিলেছে। সগরভাঙায় এর সংখ্যা স্পষ্ট নয়।

    পশুপ্রেমী তথা একটি পশুকল্যাণকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক মণীশ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই প্রজাতির হায়না খুবই পরিবেশ–বান্ধব। মানুষের কোনও ক্ষতি করে না। সাধারণত প্রত্যন্ত এলাকায় ফেলে দেওয়া মৃত পশুর দেহ খেয়ে জীবণধারন করে। গৃহপালিত পশুদের উপরে আক্রমণ করে না। তবে সম্প্রতি এরা খাদ্যের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এদের বিশেষ দেখা যায় না বলেই হয়তো স্থানীয়রা ভয় পেয়ে এদের আক্রমণ করেছে।’

    অতীতেও খনি শিল্পাঞ্চলে কয়কেটি ডোরাকাটা হায়নার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পশুপ্রেমীদের ধারণা, স্থানীয়দের আক্রমণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। এদের বাঁচাতে বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে।

  • Link to this news (এই সময়)