• অসুস্থ হয়ে এখন গৃহবন্দি আন্দোলনের মুখ রাসমণি
    এই সময় | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • দিগন্ত মান্না, কোলাঘাট

    রাসমণিকে মনে আছে? রাসমণি পাত্র। যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চাকরি না–পেয়ে যিনি কলকাতায় গান্ধী মূর্তির সামনে নিজের মাথা মুণ্ডন করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এসএসসি–র ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল হয়ে যাওয়ার পরে কার্যত গৃহবন্দি চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনের অন্যতম মুখ, কোলাঘাটের রাসমণি পাত্র। হাজার দিনেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে রাসমণি এখন অসুস্থও।

    কোলাঘাটের কোদালিয়ার বাসিন্দা রাসমণি এডুকেশনে এমএ। করেছেন বিএড–ও। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় একাদশ-দ্বাদশ বিভাগে উত্তীর্ণ হন। প্রথম দফার ইন্টারভিউয়ে ডাকও পেয়েছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত মেধা তালিকায় ঠাঁই হয়নি তাঁর।

    নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাকি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রাসমণিও ২০২০ সালে যোগ দেন ধর্মতলার ধর্না–মঞ্চে। রাসমণির ছেলের বয়স তখন মাত্র তিন বছর। বাবা-মায়ের কাছে ছেলেকে রেখে রোজ বেরিয়ে যেতেন আন্দোলন মঞ্চের উদ্দেশে। ফিরতেন রাতে। এ ভাবে কেটেছে তিন বছর। আশা ছিল, সরকার হয়তো তাঁদের দাবি মেনে নেবে। কিন্তু ধর্না এক হাজার দিনে পৌঁছে যাওয়ার পরে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে রাসমণির। মাথা মুণ্ডন করে প্রতিবাদ জানান তিনি।

    ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে দেয়। রাসমণি সেদিনও কলকাতার ধর্নামঞ্চেই ছিলেন। রায় শোনার পরে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে আসেন। তারপর থেকে অসুস্থ তিনি। রাসমণির কথায়, ‘টানা তিন বছর অনিয়মের জেরে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাচ্ছি।’

    মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত শিক্ষককে স্কুলে ফেরার কথা বলেছেন। এ দিক নিজেদের অবস্থানে অনড় চাকরিহারা শিক্ষকরাও। শিক্ষক আন্দোলনকে সমর্থন করেন রাসমণি। তবে তাঁর গলাতে শোনা গেল আক্ষেপেরও সুর, ‘প্রথম থেকেই সবাইকে আমাদের আন্দোলনের পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তখন যোগ্য শিক্ষকরা আমাদের পাশে দাঁড়াননি। ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ভরসা করে চাকরি করে যাচ্ছিলেন। এখন যা হওয়ার, তাই হলো। শারীরিক সমস্যার কারণে কলকাতায় যেতে পারছি না। তবে এর শেষ দেখার অপেক্ষায় আছি।’

  • Link to this news (এই সময়)