• মৃত্যু উপত্যকা পহেলগাঁও, স্ত্রী-সন্তানদের সামনেই গুলিতে ঝাঁজরা পুরুলিয়ার যুবক
    প্রতিদিন | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ভূস্বর্গে জঙ্গি হামলায় প্রাণ গেল বাংলার আরেক পর্যটকের। পুরুলিয়ার বাসিন্দা ৪১ বছর বয়সী মণীশরঞ্জন মিশ্রের মৃত্যুর খবর এসেছে। শোকের ছায়া পুরুলিয়ার ঝালদায়। কর্মসূত্রে আইবি অফিসার মণীশ সপরিবারে হায়দরাবাদে থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় এখনও অবধি ২৬ জনের প্রাণ গিয়েছে বলে অসমর্থিত সূত্রে খবর। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এখনও ১৬ জনের প্রাণ যাওয়ার কথা প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও বাংলার তিনজনের মৃত্যুর খবর এখনও দিল্লি থেকে নিশ্চিত করা হয়নি।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিক পদে ছিলেন মণীশরঞ্জন মিশ্র। জম্মু ও কাশ্মীরে তিনি সপরিবারে বেড়াতে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার তাঁরা পহেলগাঁওতে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখানেই হয় সেই ভয়াবহ জঙ্গি হামলা। নিরীহ সাধারণ মানুষদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। সেই গুলিতেই ঝাঁজরা হয়ে যান মণীশ। তাঁর মৃত্যুর খবর গতকালই পুরুলিয়ার ঝালদার বাড়িয়ে আসে। দুঃসংবাদ শোনার পরেই কান্নার রোল ওঠে বাড়িতে। শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মসূত্রের জন্য মণীশ হায়দরাবাদেই থাকতেন। তাঁর আদি বাড়ি পুরুলিয়ার ঝালদার পুর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। পুরনো বাঘমুন্ডি রোড এলাকার এই বাসিন্দা হায়দরাবাদ থেকেই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন।

    মণীশের দুই ভাইয়েরও বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল। আজ বুধবার মণীশও সপরিবারে কাশ্মীর থেকে বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে যেতেন। সেখানে তাঁদের সকলের দেখা করার কথা ছিল। তার আগেই ঘটে গেল এই ভয়াবহ হামলা। মণীশের ভাই বিনীত মিশ্র বলেন, “কাল বিকালে এই খবরটা পাই। আমাদের বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল। দাদা পরিবার নিয়ে কাশ্মীর থেকে সেখানেই আসতেন। যাওয়ার পথেই এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর পাই।” ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা। প্রতিবেশীরাও ওই বাড়িতে আসতে শুরু করেন। আজ বুধবার সকাল থেকেই ওই বাড়ির সামনে ভিড় সাধারণ মানুষের। দুঃসংবাদ পেয়ে অন্যান্য আত্মীয়স্বজনরাও ওই বাড়িতে পৌঁছচ্ছেন বলে খবর।

    ঝালদার বাসিন্দা মণীশের বন্ধু আদিত্য শর্মা বলেন, “ওই তিন ভাইয়ের পাশাপাশি তাঁদের বৃদ্ধ বাবারও বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল। জঙ্গি হামলার পর ডালটনগঞ্জ থেকে বাড়ি ফিরে আসেন। এই ঘটনায় দ্রুত কেন্দ্রীয় সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এরপর কাশ্মীরে কেউ বেড়াতেই যেতে পারবেন না। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।” মণীশের বৃদ্ধ বাবা মঙ্গলেশ মিশ্র ঝালদা হিন্দি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি অবসর নেন। পড়শি সন্তোষ চালক বলেন, “আমি মণীশকে কোলে-পিঠে বড় করেছি। ছেলেটা এভাবে জঙ্গি হামলায় মারা গেল। ভাবতেই পারছি না।” আজ দুপুর সাড়ে ১১ টায় ওই নিহত আইবি অফিসারের বাড়িতে যাবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, পুরুলিয়ার সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
  • Link to this news (প্রতিদিন)