প্রাণে বেঁচে গেলেও উৎকণ্ঠা এখনও কাটেনি। কাশ্মীর বেড়াতে গিয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হুগলির এক পর্যটক। ঘর থেকে বেরোতে পারছেন না। ভূস্বর্গে বেড়াতে গিয়ে যে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে, এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না জয়ন্ত সমাদ্দারদের। গত ১৬ এপ্রিল হুগলি থেকে ২৫ জনের একটি দল কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছে। ২৮ তারিখ তাদের ফেরার কথা। মঙ্গলবার পহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনায় আপতত ভূস্বর্গে হোটেলবন্দি তাঁরা। তাঁদের বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান জয়ন্ত।
চুঁচুড়ার একটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে পর্যটকদের ওই দল কাশ্মীর গিয়েছে। চুঁচুড়া, পাণ্ডুয়া, সিমলাগড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে পর্যটকরা রয়েছেন ওই দলে। মঙ্গলবার শ্রীনগর থেকে দুপুরে পহেলগামে পৌঁছেই এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখে পড়েন তাঁরা। এখন অন্য চিন্তা, বাড়ি ফিরবেন কী ভাবে? বুধবার পহেলগামের রাস্তাঘাট থমথমে। সমস্ত দোকানপাট বন্ধ। কোনও যানবাহন চলছে না। রাস্তায় টহল দিচ্ছে ভারতীয় সেনা।
পর্যটক জয়ন্ত জানান, মঙ্গলবার বৈসরন ভ্যালিতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু তার আগেই জঙ্গি হামলা! কপাল জোরে বেঁচে আছেন, বলছেন জয়ন্ত। তাঁর কথায়, ‘আমরা হোটেলবন্দি হয়ে আছি, বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। আজকে ভেবেছিলাম নেমে যাব। কিন্তু নামতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা করে তাহলে আমরা নিচে নেমে যাব।’
এদিকে উৎকণ্ঠা রয়েছে পর্যটকদের পরিবারগুলিরও। হুগলির সিমলাগড়ের জয়ন্ত সমাদ্দার ব্যবসায়ী। বন্ধুরা মিলে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছেন। সেখানে গিয়ে এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ায় চিন্তায় পরিবারও। বৌদি চম্পা সমাদ্দার জানান, সকালে ফোনে কথা হয়েছে। পহেলগামে হোটেলের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু ঘর থেকে কাউকেই বাইরে বেরোতে দিচ্ছে না। প্রত্যেকে সুরক্ষিত থাকলেও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
সিমলাগড় থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়েছেন সুমন মণ্ডল। তাঁর মা আরতি মণ্ডল বলেন, ‘গত ১৬ তারিখ ছেলে বৌমা ও দুই নাতিকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনার আগে ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তারপর আর এখনও কথা হয়নি। আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল ভালো আছি কি না?’ পর্যটন সংস্থার তরফে সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মে মাস পর্যন্ত তাঁদের পাঁচটা বুকিং ছিল। ইতিমধ্যে সেগুলি বাতিল হওয়া শুরু হয়েছে।