• জঙ্গি হামলার আতঙ্ক এখনও কাটেনি, শ্রীনগর ফিরছে হুগলির দে পরিবার...
    আজকাল | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি:‌ চতুর্দিকে আতঙ্কের পরিবেশ। ভূস্বর্গে বেড়াতে গিয়ে মঙ্গলবার পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ২৬ পর্যটকের। ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কেটেছে। বেড়েছে সেনাবাহিনীর তৎপরতা। আর যাঁরা জঙ্গি হামলার সময় পহেলগাঁওয়ে ছিলেন। অথচ বরাত জোরে বেঁচেছেন। ঘটনার পর আতঙ্ক তাঁদের আরও পেয়ে বসেছে। তাই তাঁরা দ্রুততার সঙ্গে প্রস্তুতি নিয়েছেন শ্রীনগর ফেরার। ঘটনার দিন সেটা সম্ভব হয়নি। তাই দিন গড়াতেই ফেরার প্রস্তুতি।

    ফেরার চেষ্টা করছেন সেখানে থাকা প্রায় সকলেই। ফলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সকাল গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও গাড়ি এগোচ্ছে না। জ্যামে আটকে নাজেহাল অবস্থা। কিছুতেই সেই ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। আতঙ্কিত, বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন হুগলির কেওটা টায়ারবাগানের বাসিন্দা শিক্ষক চঞ্চল দে’‌র পরিবার। চঞ্চল বাবু কুন্তিঘাট স্কুলের শিক্ষক। স্ত্রী, পুত্র, পরিবার সহকর্মী নিয়ে মোট ১১ জন একসঙ্গে গত ১৬ তারিখে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। আগামী ২৮ এপ্রিল তাঁদের হুগলিতে ফেরার কথা। বুধবার বেলায় টেলিফোনে চঞ্চল বাবু জানিয়েছেন, জঙ্গি হামলার ঘটনার দিন অর্থাৎ ২২ এপ্রিল পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে পহেলগাঁও পৌঁছেছিলেন। দুপুরে বৈসারন ভ্যালিতে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি যেখানে ছিলেন। সেখান থেকে বৈসারণ ভ্যালির দূরত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার। খাওয়া দাওয়া সেরে সবাই একসঙ্গে গাড়িতে করে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। হোটেলের বাইরে বেরিয়ে কিছুটা যেতেই অনেকে তাঁকে বলে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। হেটেলে ফিরে যেতে। গাড়ি ঘুরিয়ে ফেরার পথে তিনি দেখেন প্রচুর অ্যাম্বুল্যান্স বৈসারন ভ্যালির দিকে যাচ্ছে। রাস্তায় একের পর এক সেনাবাহিনীর গাড়ি।

    সেনাবাহিনীর তৎপরতা দেখে সকলেই ঘাবড়ে যান। রাস্তায় তখন তুমুল যানজট। প্রায় ঘন্টা খানেকের চেষ্টায় হোটেলে ফিরতে পেরেছিলেন। চঞ্চল বাবু জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। বার বার জিজ্ঞাসা করতে থাকে কী হয়েছে? এত সেনা কেন? আতঙ্কে বমি করতে শুরু করেছিল চঞ্চল বাবুর ছেলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই গোটা এলাকা শুনশান হয়ে যায়। এভাবেই কোনওরকমে রাত কাটিয়ে বুধবার সকালে পরিবার সহ সকলে শ্রীনগরের উদ্দেশে রওনা দেন চঞ্চল বাবু। তবে ব্যাপক যানজট। গোটা এলাকা সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছে। খুবই কড়াকড়ি। জোরদার চেকিং চলছে। কোথাও খাবার দাবার কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান চঞ্চল বাবু। রাস্তায় আটকে রয়েছেন। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। সকাল থেকে প্রায় ৮ ঘণ্টা কেটেছে। খুব বেশিদূর পৌঁছতে পারেননি। শ্রীনগর এখনও অনেক দূর। কখন পৌঁছাবেন জানেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। জঙ্গি হামলার খবর পাওয়ার পর চরম উৎকণ্ঠায় চঞ্চল বাবুর দাদা তাপস দে এবং বৌদি বাসন্তী দে। তাপস বাবু বলেছেন, জঙ্গি হামলার খবর পেয়ে তিনি ভাইকে ফোন করেছিলেন। খুব চিন্তা হচ্ছিল। কোথায় আছে। কেমন আছে। ভাবনা হচ্ছিল। ছোটো বাচ্চা নিয়ে গেছে। তাই আরও বেশি চিন্তা হচ্ছিল। বুধবার সকালে আবার কথা হয়েছে। কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। বৌদি বাসন্তী দে জানিয়েছেন, তাঁর দেওর আগেও অনেকবার কাশ্মীর গেছে। আবারও গেছিল।  

     
  • Link to this news (আজকাল)