• ডিআইদের সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ শিক্ষা অধিদপ্তরের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • এবার রাজ্যের প্রত্যেকটা (ডিআই) অর্থাৎ জেলা শিক্ষা আধিকারিকদের সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিল স্কুল শিক্ষা অধিদপ্তর।

    মঙ্গলবার স্কুল শিক্ষা অধিদপ্তরের তরফে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্দেশিকায় এটাও জানানো হয়েছে যে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে ইমেল মারফৎ নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির এমন শিক্ষকদের তালিকা পাঠানো হয়েছে, যারা ২০১৬ এসএলএসটিতে নিযুক্ত হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা ‘দাগি’ বলে চিহ্নিত নন। এবং যারা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যোগ দিতে পারবেন। সেই তালিকাটি উপযুক্ত পদক্ষেপের জন্য পাঠানো হচ্ছে।

    সংশ্লিষ্ট নির্দেশে আরও বলা হয়েছে যে, সুপ্রিম কোর্টের এসএলএসটি ২০১৬ সংক্রান্ত দু’টি পৃথক নির্দেশের নথিও পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে মহামান্য সর্বোচ্চ আদালত অনুমতি দিয়েছে যে, যে সমস্ত সহ-শিক্ষকরা এসএলএসটি ২০১৬ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তাঁরা ৩১ ডিসেম্বর নতুনভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন। যদিও এপ্রিল মাসের বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে এই নির্দেশিকায় কোনও উল্লেখ নেই।

    এই নির্দেশ ঘিরেই আশার আলো দেখছেন শিক্ষাবিদরা। তাহলে কি এবার এপ্রিল মাসের বেতনের জট কাটতে চলেছে? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর স্কুলে স্কুলে যে আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়েছিল যে, সময়মতো এপ্রিল মাসের বেতন মিলবে কি না? সেই জট কাটতে চলেছে বলেই মনে করছে শিক্ষামহল।

    সেক্ষেত্রে তাঁরা এ-ও মনে করছেন যে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এপ্রিল মাসের বেতন নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছিল, যদি দ্রুত ডিআই স্তরের নির্দেশ স্কুলে আসে, তাহলে সেই আশঙ্কা দ্রুত মিটবে বলেই আশা করছেন তাঁরা।

    এ প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘ ডিআইদের উদ্দেশ্যে নির্দেশিকা পাঠানো হলেও, বিদ্যালয় স্তরে তা এখনও আসেনি। সেক্ষেত্রে স্পষ্ট ভাবে টেন্টেড- আনটেন্টেডদের তালিকা স্কুলগুলোকে পাঠাতে হবে। তা না-হলে, বিদ্যালয়ের পক্ষে তা বোঝা সম্ভব নয়।’

    শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, এই ‘আনন্টেন্টেড’ শিক্ষকদের তালিকা যদি স্কুল স্তর পর্যন্ত পৌঁছয়, সেক্ষেত্রে বেতন সংক্রান্ত বিষয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন প্রধান শিক্ষকরা। সেই অনুযায়ী তাঁরা সরকারি পোর্টালের মাধ্যমে বেতনের রিকুইজিশন উচ্চস্তরে পাঠাতে পারবেন। যা এতদিন আটকে ছিল। সাধারণত সমস্ত স্কুলের তরফে প্রত্যেক মাসের ১০ তারিখের মধ্যে সরকারি পোর্টালের মাধ্যমে বেতন সংক্রান্ত রিকুইজিশন পাঠাতে হয় প্রধান শিক্ষিকদের। এক্ষেত্রে রিকুইজিশন যাওয়ার পরেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এপ্রিল মাসের বেতন ত্বরান্বিত হবে। এ ক্ষেত্রে ডিআইদের তরফে স্পষ্ট নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে স্কুলগুলো। যদিও এখনও ডিআইদের তরফ থেকে স্কুল স্তরে কোনও নির্দেশ আসেনি।’

    বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, ডিআইয়ের তরফ থেকে সেই তালিকা স্কুলগুলোতে এলে, স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা পোর্টালের মাধ্যমে বেতনের রিকুইজিশনও পাঠাতে পারবেন। যাতে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীদের এপ্রিল মাসের বেতন ত্বরান্বিত হয়।

    প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের দু’টি রায়, প্রথমটিতে চাকরি খুইয়েছিলেন ২০১৬ এসএসসি’র প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীরা। এবং দ্বিতীয় নির্দেশটি যেখানে এসএসসি-র আবেদনের ভিত্তিতে রায়ের মধ্যে কিছু অংশ সংশোধন করা হয়েছিল। সেখানে শিশুদের পঠন-পাঠনের স্বার্থে ‘দাগি’ বা ‘টেন্টেড’ নন, এমন ‘আনটেন্টেড’ শিক্ষকরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে আসতে পারবেন। আবার এই সময়ের মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করারও নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ফলে, এই আনটেন্টেড কারা? তাই কারা স্কুলে যোগ দেবেন আর কারা নয়, এই নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল স্কুলে স্কুলে। তারা চাইছিলেন যে, শিক্ষা দপ্তরের তরফে বা ডিআই থেকে এই বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে তাদেরকে কোনও স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হোক।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)