• গ্রামাঞ্চলে ক্রমশ বাড়ছে নাবালিকা মায়ের সংখ্যা! উদ্বিগ্ন প্রশাসন
    প্রতিদিন | ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে কিশোরী মায়ের সংখ্যা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে চিন্তার ছাপ শ্যামপুর ২ ব্লক প্রশাসনের কপালে। কেবল ওই একটি ব্লক এলাকাতেই প্রায় দেড় হাজার নাবালিকা মায়ের সন্ধান মিলেছে। ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে ব্লক প্রশাসন। তারা স্কুলে স্কুলে ক্যাম্প শুরু করেছে। পাশাপাশি তৃণমূল স্তরে সমস্যা মেটাতে পাড়ায় পাড়ায় যাওয়ার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে বলে খবর।

    হাওড়া জেলার একেবারে গ্রামীণ এলাকা শ্যামপুর। কৃষিকাজ সেখানকার মানুষের প্রধান পেশা। বহু মানুষ ইটভাটার সঙ্গে জড়িত, এছাড়া রয়েছে মৎস্যজীবী পরিবার। বছরখানেক ধরে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রসূতির পরিসংখ্যান থেকে ব্লক প্রশাসনের নজরে আসে, এলাকায় কিশোরী মায়ের সংখ্যয় বাড়ছে। এরপরই ব্লক প্রশাসনের কর্তারা নড়েচড়ে বসেন। বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে নাবালিকা বিয়ে রোধে সচেতনতা শিবির শুরু করা হয়। সঙ্গে থাকছে নারী ও শিশু কল্যাণ বিভাগ এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে তারা দশটির বেশি স্কুলে এই শিবির করেছে। অনেক স্কুলে উপস্থিত থাকছেন বিডিও সঞ্জু গুহমজুমদার নিজেও। এরপরের ধাপে প্রশাসনের পরিকল্পনা রয়েছে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে নাবালিকা বিয়ে রোধের ব্যাপারে সচেতনতা শিবির করা।

    শ্যামপুর দু’নম্বর ব্লকের বিডিও সঞ্জ গুহমজুমদার এবং শ্যামপুর দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নদেবাসী জানা বলেন, “এটা সামাজিক সমস্যা। কেন এটা বাড়ছে আমরা খোঁজ নিয়ে বিষয়টা দেখছি এবং পাশাপাশি নাবালিকা বিয়ে রোধের জন্য আমরা স্কুলে এবং পাড়াতেও সচেতনতা শিবির করব।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ বছরের নিচের প্রসূতিদের মধ্যে নাবালিকাদের সংখ্যা বেশি। ১৫ ও ১৬ বছর বয়সিদের সংখ্যা বেশি। এমনকী ১৫ বছরের নিচে বয়স রয়েছে এমন নাবালিকা মায়েদেরও খোঁজ পেয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর ও ব্লক প্রশাসন। যা রীতিমতো উদ্বেগের বলে মনে করছে প্রশাসন।

    প্রশাসনের বক্তব্য, এই নাবালিকাদের মধ্যে পালিয়ে গিয়েই বিয়ে করছে বেশি। পরে তাদের আবার সামাজিকভাবেও বিয়ে হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে যে খবর আসছে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারছে কিন্তু যেগুলোর খবর আসছে না, সেগুলো ধরা পড়ছে ওই বিবাহিতরা প্রসূতি হওয়ার পর। এতে নানা সমস্যায় পড়ছে ওই নাবালিকা মায়েরা। বিডিও আরও বলেন, “আমরা শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে পড়ুয়াদের বিষয়েও খোঁজখবর রাখতে বলেছি। তারাও আশ্বাস দিয়েছেন।” প্রসঙ্গত, পুলিশের পক্ষ থেকেও নাবালিকা বিয়ে রোধ করতে স্বয়ংসিদ্ধা প্রোগ্রাম করা হচ্ছে। প্রশাসনের কর্তারা আশাবাদী, বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)