পহেলগাম ঢুকছিলেন রকি লিন্ডারা। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হচ্ছে। পাহাড়ের ফাঁক দিয়ে সূর্য পাটে বসেছে। মুগ্ধ হয়ে দেখছিলেন সেই দৃশ্য। আচমকাই চোখে পড়ল, কাদামাখা রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটে আসছেন কয়েকজন। যেন ভয়ঙ্কর কোনও কাণ্ড ঘটেছে। কী হয়েছে? জানতে পারলেন জঙ্গি হামলা। ব্যস, ওখান থেকেই ফিরে পড়েন। আর পহেলগামমুখো হননি। কাশ্মীর থেকে একটি ভিডিও বার্তায় এমনটাই জানালেন কোলাঘাটের রকি লিন্ডা।
এই মুহূর্তে ৩টি গ্রুপ মিলিয়ে কোলাঘাটের প্রায় ৯৮ জন রয়েছেন কাশ্মীরে। তার মধ্যে আবার ৫২ জন পহেলগামেই ছিলেন মঙ্গলবার। এমনটাই জানাচ্ছেন এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা অসীম দাস। তিনি বলছেন, ‘জঙ্গি হামলার পর পুরো ব্যাপারটা ঘেঁটে গিয়েছে। অনেকেরই আজকালের মধ্যে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু এখন কোথায় থাকবেন, কীভাবে ফিরবেন, পুরোটাই অনিশ্চিত। অবশ্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। আমরা সব রকম সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
তবে আশার কথা হল, হতাহতের কোনও খবর নেই। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, অনুরাগ দাস, টুকু দাস, তাপসী দাস, দেবলীনা রাজপন্ডিত, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, মিঠু মন্ডল, মধু পাত্রর মতো অনেকেই আটকে রয়েছেন কাশ্মীরে। কোলাঘাটের যোগেন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা দেবলীনা রাজ পণ্ডিতের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। একটি অডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘কোনওরকমে শ্রীনগরে পৌঁছেছি। কাল ফ্লাইট ছিল। দাদাকে দিয়ে আজ রাতের টিকিট কাটিয়েছি। পহেলগামের অবস্থা ভালো নয়। তবে শ্রীনগর শান্ত। এখন যা হোক করে বাড়ি পৌঁছতে পারলে বাঁচি।’
কোলাঘাটের কমলা তুঙ্গের কয়েকজন আত্মীয় এখনও কাশ্মীরে আটকে। ফোনে তাঁদের সঙ্গে এখনও কথা হয়নি। তবে জানতে পেরেছেন, সবাই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। বুধবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কথা হয়নি। তবে জানতে পেরেছি ভালো আছে। একটু চিন্তা তো হচ্ছেই। কত বড় ঘটনা ঘটেছে। টিভিতে দেখেছি। এখন ভালোয় ভালোয় সবাই বাড়ি ফিরুক, এটুকুই চাই।’