পেশায় তিনি একজন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মী। কর্মসূত্রে স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন হায়দরাবাদে। তবে তাঁর আদি বাড়ি পুরুলিয়ার ঝালদায়। মঙ্গলবার কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারালেন সেই গোয়েন্দা আধিকারিক মণীশরঞ্জন মিশ্র।
গত ১৫ এপ্রিল হায়দরাবাদ থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন মণীশ। প্রথমেই তাঁদের গন্তব্য ছিল অযোধ্যা। সেখান থেকে হরিদ্বার হয়ে কাশ্মীরের পৌঁছোন তাঁরা। পহেলগাঁওয়ের সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে পরিবার নিয়ে সময় কাটাচ্ছিলেন মণীশ। কথা ছিল সেখান থেকেই বৈষ্ণোদেবী যাবেন। সেখানে তাঁদের সঙ্গে বাবা-মা-সহ পরিবারের বাকি সদস্যেরা যোগ দিতেন। কিন্তু তা হয়নি। তাঁকে এখন ফিরতে হবে কফিনবন্দি হয়ে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে মণীশের শরীর।
মণীশের পরিবার থাকে ঝালদার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের পুরনো বাঘমুণ্ডি রোডে। আগে তিনি কর্মসূত্রে রাঁচীতে ছিলেন। মাস কয়েক হল হায়দরাবাদে বদলি হয়ে যান। সেখানে তাঁর সঙ্গে থাকতেন স্ত্রী, তাঁদের এক পুত্র এবং কন্যা। তাঁদের নিয়েই কাশ্মীরে গিয়েছিলেন। পরিকল্পনা ছিল, পহেলগাঁও ঘুরে বৈষ্ণোদেবী দর্শনে যাবেন। মঙ্গলবার সকালেই মণীশের বাবা-মাকে নিয়ে তাঁর ভাইয়ের পরিবার দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু মাঝপথেই আসে ফোন। জানানো হয়, জঙ্গি হামলার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর! সেই খবর শুনে মণীশের পরিবার ফিরে যায় ঝালদার বাড়িতে।
মণীশের ভাই দীনেশরঞ্জন বলেন, ‘‘ বৌদি, সন্তানদের নিয়ে দাদা অযোধ্যা ও হরিদ্বার হয়ে কাশ্মীরে পৌঁছেছিলেন। সেখান থেকেই তাঁদের বৈষ্ণোদেবী যাওয়ার কথা ছিল। আমাদেরও সেখানে যাওয়ার কথা। কিন্তু রাস্তাতেই দুঃসংবাদ পাই।’’ মণীশের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ঝালদায়। তাঁর ঝালদার বাড়িতে বুধবার সকালে যাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতোর।