সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের কাছে কাশ্মীর তাঁর ‘দ্বিতীয় ঘরবাড়ি’। ভৌগোলিক সীমান্তের বাঁধা পেরিয়ে কাশ্মীরি ভাষা শিখে ফেলেছেন। কখনও বা গুনগুন করে গেয়ে উঠেছেন কাশ্মীরি ভাষার গান। সাম্প্রদায়িকতার রক্তচক্ষুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঈদ পালন করেছেন। এক দুঃস্থ কাশ্মীরি পরিবারের মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন অভিনেতা। উল্লেখ্য, ভাস্বর কোনও দিনই চিরাচরিত চিন্তাভাবনাকে প্রশয় দেননি। বরং পরিবর্তে তার কাছে গুরুত্ব পেয়েছে মানবতা। এবার পহেলগাঁও আবহে এক ‘অন্য’ কাশ্মীরের কথা শোনালেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেও বুঝিয়ে দিলেন ভূস্বর্গ শুধুই ভয়ঙ্কর নয়, তার একটা মানবিক দিকও রয়েছে।
সেই কাশ্মীর, যে উপত্যকার ইসলাম ধর্মাবলম্বী স্থানীয়রা হিন্দু পর্যটকদের উপর আঘাত হানায় গর্জে উঠেছে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। যে কাশ্মীরের বাসিন্দারা দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে মোমবাতি মিছিলে শামিল হয়ে সমস্বরে স্লোগান তুলেছেন। ভূস্বর্গের সকলেই কি হিন্দুবিরোধী? এমন প্রশ্নে যখন সরগরম নেটপাড়া, তখন ‘মানবিক কাশ্মীর’কে চেনালেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। অভিনেতার কথায়, ‘রোজগারের রাস্তা বন্ধ করে বেকার যুবকদের মগজধোলাইয়ের পথ খুলে দেওয়া হল। এমন একটা কাণ্ড ঘটিয়ে সরল কাশ্মীরিদের মেরুদণ্ডে আঘাত হানা হল। এমতাবস্থায় ভাস্বর তাঁর কাশ্মীরি বন্ধু এবং তাঁদের পরিবারকে উদ্বিগ্ন। পহেলগাঁওয়ের নারকীয় সন্ত্রাসের ঘটনায় উপত্যকার স্থানীয়রা কতটা আশঙ্কায় রয়েছেন? ভাস্বর জানালেন, তাঁর কাছের কিছু বন্ধু আক্ষেপ করছেন, আর সম্ভবত তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না। আবারও সকলের কাছে বার্তা চলে গেল- কাশ্মীর আদতে হিন্দুবিরোধী। আবার হিন্দু-মুসলিম বিভাজন হয়ে গেল! কিন্তু এটা তো সত্যি নয়। কীরকম? সেটাও বললেন অভিনেতা।
ভাস্বর জানালেন, কাশ্মীরের কতিপয় স্থানীয়দের মদতেই হয়তো জঙ্গিরা গা ঢাকা দিতে পেরেছে, কিন্তু তার বিপরীত চিত্রও রয়েছে বটে। জম্মু-কাশ্মীরে আটকে থাকা বহু পর্যটককে স্থানীয়রা বিনামূল্যে পৌঁছে দিচ্ছেন রেলওয়ে স্টেশন কিংবা এয়ারপোর্টে। পহেলগাঁও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এদিন কাশ্মীরি ভাইদের প্রতিবাদী মিছিলের মুহূর্তও তুলে ধরলেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। বছরখানেক ধরেই ভূস্বর্গে যাতায়াত তাঁর। উপত্যকায় অভিনেতার একাধিক বন্ধুও রয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের কাছে ভাস্বর জানিয়েছেন, “কাশ্মীর এখন অনেক বদলে গিয়েছে। পর্যটকদের অন্যায়ভাবে গুলি করার প্রতিবাদে মোম হাতে রাস্তায় নেমেছে আমার কাশ্মীরি ভাইয়েরা। স্লোগান দিয়ে দোষীদের কড়া শাস্তি চাইছেন তাঁরা। নব্বইয়ের দশকেও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সঙ্গে কী ঘটেছিল, সেটা সকলে জানি। এটা ২০২৫ সাল। পারলে পাতাল থেকে দোষীদের খুঁজে শাস্তি দেওয়া হবে।”