বাংলার বাড়ি: প্রধানের জমিতে শ্যালিকার ঘর, খবর পেতেই প্রথম কিস্তির টাকা ফেরতের নির্দেশ প্রশাসনের
বর্তমান | ২৪ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: কোচবিহার-১ ব্লকের হাঁড়িভাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান দীপঙ্কর বর্মনের জমিতে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন তাঁর মা ও বিবাহিত শ্যালিকা। ঘটনা নজরে আসতেই প্রশাসন বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ফেরত দিতে বলেছে। পাশাপাশি, শ্যালিকাকে নিজের জমিতে বাড়ি বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাঁড়িভাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নিজে অনিয়ম স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে একই জায়গায় থাকলেও তাঁর মা আলাদা খাওয়া দাওয়া করেন বলে দাবি করেছেন প্রধান। কীভাবে প্রধানের বিবাহিত শ্যালিকা প্রধানের জমিতে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের বাড়ি বানাতে শুরু করলেন, সেটা এতদিন নজরে না পড়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
এ ব্যাপারে কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সৌমেন দত্ত বলেন, হাঁড়িভাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের মা প্রধানের কাছে থাকেন। তাই তাঁকে টাকা ফেরত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানের শ্যালিকাকে নিজের জায়গায় বাড়ি বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাঁড়িভাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের দীপঙ্কর বর্মন বলেন, শ্যালিকার নামে এখানে জমি নেই। তবে থাকবেন বলে এখানেই ঘর তৈরি করছিলেন। এরপরই বিডিও চিঠি দিয়ে শ্যালিকাকে নিজের জমিতে ঘর বানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আমার মায়ের কাঁচা বাড়ি ছিল। তিনি আলাদা খাওয়াদাওয়া করেন। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে মা আবেদন করেছিলেন। তিনি সেই বাড়ি বানাচ্ছিলেন। এই ব্যাপারে দীপঙ্করবাবুর মা পূর্ণিমা বর্মন বলেন, আমি বাপের বাড়িতে এসেছি। শুনেছি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একটা নির্দেশ এসেছে।
পাটছড়ার স্থানীয় বাসিন্দা ও পেশায় আইনজীবী নাজমুল আলম সরকার বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পর আমি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম। তারপরই প্রশাসন নডেচড়ে বসে। চিঠি করে টাকা ফেরত ও নিজের জমিতে বাড়ি বানানোর নির্দেশ দিয়েছে।
হাঁড়িভাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তৃণমূল কংগ্রেসে শঙ্কর দেবনাথ বলেন,দীপঙ্করবাবুর মা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। বাংলার বাড়ির আওতায় তিনি ঘর পেয়ে থাকলে দোষের কিছু নেই। কিন্তু, তাঁর শ্যালিকার ঘর নির্মাণটা অন্যায় হয়েছে।
তোপ দেগে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, তৃণমূল যে স্বজনপোষণ করে, এই সব ঘটনাই প্রমাণ।