লো ভোল্টেজে চলছে না পাম্প, খানাকুলের স্কুলগুলিতে তীব্র জল সঙ্কট
বর্তমান | ২৪ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: ভূগর্ভস্থ জল তোলার জন্য সাবমার্সিবল পাম্প রয়েছে। কিন্তু, লো-ভোল্টেজের জেরে তা না চলায় জল উঠছে না। স্কুলের পড়ুয়াদের দূরে নলকূপ থেকে বালতিতে জল বয়ে আনতে হচ্ছে। কোথাও আবার ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে পাম্প চালিয়ে ট্যাঙ্কে জল মজুত করতে হচ্ছে। বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের জেরে খানাকুলের একাধিক স্কুলে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গরম বাড়তেই জলের টান শুরু হয়েছে স্কুলগুলিতে। প্রশাসনিক স্তরে বারবার জানিয়েও সুরাহা হয়নি। ফলে বিপাকে পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। খানকুলের একাধিক গ্রামের বাসিন্দারাও এই সমস্যায় ভুগছেন।
খানাকুলের অরুণ্ডা পঞ্চায়েতের ধারাশিমুলে রয়েছে পাঁচপুকুর হাই স্কুল। সেখানে গত বছর বন্যায় স্কুলের একতলা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তখন কাদা ঢুকে যায় সাব মার্সিবল পাম্পে। নলকূপের পাইপলাইনে পাম্প ঢুকিয়ে অস্থায়ী সমাধান করে জল তোলা হচ্ছিল। কিন্তু, চলতি এপ্রিল মাসে গরম পড়তেই লো-ভোল্টেজের সমস্যা শুরু হয়েছে। তার জেরে সেই পাম্প না চলায় জল উঠছে না। ফলে, সেখানকার পড়ুয়ারাই বালতি নিয়ে স্কুল থেকে কিছু দূরে কাঁড়ারপাড়া থেকে জল বয়ে নিয়ে আসছে। তাদের সঙ্গে মিড ডে মিলের রাঁধুনিরাও জল আনছেন।
পাঁচপুকুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিমাদ্রি মুখোপাধ্যায় বলেন, স্কুলে পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু, লো-ভোল্টেজের জন্য পাম্প চলছে না। তাই যন্ত্রও কাজে লাগছে না। বন্যার পর আমাদের পাম্পটি বিকল হয়ে যায়। নতুন পাম্প দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েও মেলেনি। মিড ডে মিল সহ নানা প্রয়োজনে জল নিয়ে নিত্যদিন সমস্যা হচ্ছে।
ধারাশিমুল গ্রামেই রয়েছে পাঁচপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানেও সাবমার্সিবল পাম্প রয়েছে। লো-ভোল্টেজের জেরে পাম্প চলছে না। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীলকুমার পোড়েল বলেন, প্রত্যেকদিন লো-ভোল্টেজের জন্য পাম্প চলছে না। কোনও কোনও দিন ভোরবেলায় মিড ডে মিলের রাঁধুনিরা এসে পাম্প চালিয়ে ট্যাঙ্কে জল ভরে রাখছেন। তাও সবদিন সম্ভব হচ্ছে না। সেজন্য পড়ুয়াদের বাড়ি থেকে বোতলে জল নিয়ে আসতে নির্দেশ দিয়েছি। আমরা এই সমস্যার সমাধান চাই।
ওই স্কুলের শিক্ষিকা তথা স্থানীয় বাসিন্দা পারমিতা কোলে বলেন, স্কুলের পাশাপাশি আমাদের বাড়িতেও সাবমার্সিবল পাম্প চালানো যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে পাড়ার টিউবওয়েল থেকে জল নিচ্ছে সবাই। কিন্তু, সেই জলের রং ঘোলাটে। আরও গরম বাড়লে টিউবওয়েলেও জল উঠবে কিনা জানা নেই। আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামেও একই সমস্যা হচ্ছে।
এবিষয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরের আরামবাগের এক আধিকারিক বলেন, ঘটনাটি খোঁজ নিয়ে দেখছি। খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মিন্টু পাল বলেন, সমস্যার কথা শুনেছি। বিদ্যুৎ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। নতুন একটি সাবস্টেশন তৈরি হচ্ছে। সেখান থেকে বিদ্যুৎ পরিষেবা এলে সমস্যা মিটে যাবে।