ভগবানগোলায় লাগাতার আগ্নিকাণ্ড, দমকল কেন্দ্র স্থাপনের দাবি বাসিন্দাদের
বর্তমান | ২৪ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, লালবাগ: গত কয়েক দিনে ভগবানগোলা ও রানিতলা থানা এলাকায় দু’টি অগ্নি আগুন লাগার ঘটনায় চারটি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকটি গবাদি পশুর। গত ১৬ মার্চ ভগবানগোলা থানার ধনিরামপুরে পরিযায়ী শ্রমিক আলতাব শেখের বাড়িতে আগুনে লাগে। স্থানীয়রা জল ছিটিয়ে নেভানোর আগেই বাড়িঘর সহ সমস্ত জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে একটি পূর্ণবয়স্ক গোরুর মৃত্যু হয়। আলতাব শেখের পরিবার ব্লক থেকে দেওয়া ত্রিপল খাটিয়ে কোনওপ্রকারে দিন কাটাচ্ছে। গত ২৫ মার্চ, মঙ্গলবার দুপুরে রানিতলা থানার চাঁদপুর গ্রামে পাশাপাশি তিনটি বাড়ি আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। লালবাগ থেকে দমকল এসে পৌঁছনোর আগেই সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়। চৈত্রের শুরুতেই দিন কয়েকের ব্যবধানে দু’টি আগুন লাগার ঘটনায় ভগবানগোলায় দমকল কেন্দ্রের দাবিতে আবারও সরব হতে শুরু করেছেন সর্বস্তরের মানুষ। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভগবানগোলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে স্থানীয় বিধায়ক উদ্যোগী হোক, চাইছেন তাঁরা।
ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকার বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীকে ভগবানগোলায় দমকল কেন্দ্রের গুরুত্ব তুলে ধরে আবেদন জানিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি, খুব শীঘ্রই ভগবানগোলাবাসীর দাবি বাস্তবায়িত হবে।
ভগবানগোলা-১, ২ ব্লক নিয়ে ভগবানগোলা বিধানসভা গঠিত। মোট জনসংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ। অথচ ঘনবসতিপূর্ণ এই বিধানসভা এলাকায় কোনও দমকল কেন্দ্র নেই। এর জন্য ভগবানগোলার মানুষ গত কয়েক দশক ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভগবানগোলা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত ইদ্রিশ আলি। তিনি দমকল কেন্দ্র স্থাপনের জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু বিধায়কের অকাল প্রয়াণে সেই উদ্যোগে ভাটা পড়ে। পরবর্তীতে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে রেয়াত হোসেন সরকার উদ্যোগী হন। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত এলাকাবাসীর দাবি মেটেনি। স্থানীয়রা বলেন, ভগবানগোলা বিধানসভা এলাকায় প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষের বসবাস। অথচ এখানে দমকল কেন্দ্র নেই। কোনও আগুন লাগার ঘটনা হলে নেভানোর জন্য লালবাগ বা বহরমপুর দমকল কেন্দ্রে খবর দিতে হয়। সেখান থেকে ঘটনাস্থলে দমকলের ইঞ্জিন এসে পৌঁছনোর আগেই সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়।
চর বিনপাড়ার বাসিন্দা রুস্তম মিঞা বলেন, এখান থেকে লালবাগের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। বহরমপুরের দূরত্ব আরও ১০-১২ কিলোমিটার বেশি। কাজেই সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত এলাকায় আগুন লাগলে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার থাকে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে ভগবানগোলায় একটি দমকল কেন্দ্র অত্যন্ত জরুরি। ভগবানগোলার বাসিন্দা সরফরাজ শেখ বলেন, বর্তমান বিধায়ক ভগবানগোলায় দমকল কেন্দ্র স্থাপনের জন্য উদ্যোগী হয়েছেন শুনেছি। দমকল কেন্দ্র হলে ভগবানগোলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ কিছুটা হলেও রেহাই পাবে। ভগবানগোলা-রানিতলা নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক আজমল হক বলেন, এখানে দমকল কেন্দ্র হলে ভগবানগোলার পাশাপাশি লালগোলার মানুষও পরিষেবা পাবে।