• বৃষ্টি ও পাশের বাড়ির ব্যবহার করা জলে ভাসছে স্কুল চত্বর
    বর্তমান | ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: শুধু বৃষ্টির জল নয়, প্রতিবেশী বাড়িগুলির ব্যবহার্য জলও জমা হচ্ছে স্কুল চত্বরে। ফলে ভরতপুর ১ ব্লকের ৮১ নম্বর পশ্চিম তালগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়ারা। খোদ পঞ্চায়েত প্রধানের ওয়ার্ডের এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। এক হাঁটু জল ঠেলে স্কুলে ঢুকতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। আবার ছোটদের কোলে করে স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছেন অভিভাবকরা। যদিও ভরতপুর ১ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় তালগ্রামের দক্ষিণে বায়েনপাড়ায় রয়েছে স্কুলটি। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ওই স্কুলে ১১০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। রয়েছেন চারজন শিক্ষক। পড়াশুনা বা মিড ডে মিল নিয়ে অভিভাবকদের কোনও অভিযোগ না থাকলেও স্কুলে ঢোকার রাস্তা নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। ওই স্কুলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, স্কুল ঢোকার গোটা রাস্তাটিই জলে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। স্কুল চত্বরের বড় একটা এলাকা জুড়ে একহাঁটু জল। ওই জল ঠেলে ইউনিফর্ম গুটিয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী স্কুলে ঢুকছে বেরচ্ছে। তবে ছোটদের আসতে হচ্ছে বাবা-দাদার কোলে চড়ে। 

    স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তৌফিক শেখ জানায়, এমনিতে সারাবছর আমাদের জল ঠেলে স্কুলে আসতে হয়। তবে একটু বৃষ্টি হলেই ইউনিফর্ম গোটাতে হয়। অপর ছাত্রী রেহেনা খাতুন বলে, স্কুল ঢোকার রাস্তা জলে ডুবে থাকায় শ্যাওলা পড়ে গিয়েছে। তাই সামান্য নড়বড়ে হলেই আমরা জলে পড়ে যায়। বুধবারও স্কুলে ঢোকার সময় তিনজন ছাত্রী জলে পড়ে গিয়েছিল বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিভাবক শুকুরউদ্দিন শেখ বলেন, এমন ঘটনা চলছে প্রায় চার বছর ধরে। 

    স্কুলের মাস্টারদের বারবার বললেও তাঁরা কোন ব্যবস্থা নেননি। এমন অবস্থায় সবদিন স্কুলে ছেলেদের পাঠাতে পারি না। যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামরেজজোহা শেখ বলেন, এই সমস্যার কথা গত চার বছরে বারবার পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসনে জানানো হয়েছে। এমনকী কয়েকদিন আগেও বিডিওর সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানিয়েছি। অপর শিক্ষক মুজিবর রহমান বলেন, স্কুল চত্বরের কোনও নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। শুধু বৃষ্টির জল নয়, প্রতিবেশী বাড়ির জলও জমা হচ্ছে স্কুল চত্বরে। এদিকে খোদ স্থানীয় তালগ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি এই ওয়ার্ডে। ফলে প্রধানের উপরও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান মমতাজ বিবি বলেন, আমি যখন পঞ্চায়েত প্রধান ছিলাম না তখনও নিজে টাকা খরচ করে জল নিকাশির ব্যবস্থা করেছি। তবে প্রধান পদে বসার পর সেখানে দু’টি নিকাশি নালা ও একটি রাস্তার এস্টিমেট করা হয়েছে। পঞ্চায়েতে টাকা এলেই কাজ শুরু করা হবে। 

    এদিকে মঙ্গলবার সমস্যা খতিয়ে দেখতে সেখানে পৌঁছন ভরতপুর ১ বিডিও দাওয়া শেরপা। বিডিও বলেন, পুরো বিষয়টি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি। স্কুল চত্বরটি নিচু এলাকা বলেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আবার সেখানে নিকাশি নালা তৈরির মতো পরিস্থিতিও নেই। তবুও স্কুলে ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)