• পদে বসে থাকা নিষ্ক্রিয় নেতাদের সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তৃণমূলের
    বর্তমান | ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আগামী বছরই বিধানসভা নির্বাচন। দলীয়স্তরে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া যাবে না। প্রতিটি ওয়ার্ডেই বিরোধীদের পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে হবে। এমনই অঙ্গিকার নিয়েছে রামপুরহাট শহর তৃণমূল কংগ্রেস। করা হচ্ছে একাধিক পরিকল্পনা। খোদ এলাকার বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় শহরের সাংগঠনিক বিষয়টি দেখছেন। দলকে চাঙ্গা করতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পদে থাকা নিষ্ক্রিয় বুথ সভাপতিদের সরিয়ে দেওয়া হবে। সেই জন্যই মঙ্গলবার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি বুথের সভাপতি ও সেই বুথের ভোটার তালিকা যাচাইয়ের দায়িত্বে থাকা তিন পদাধিকারিকে সরিয়ে নতুন মুখ আনা হয়েছে। আশিসবাবু বলেন, আগামী বিধানসভায় যাতে শহরে ভালো ফল হয়, সেজন্য এখন থেকেই সংগঠন মজবুত করার কাজ শুরু হয়েছে। রামপুরহাট শহর থেকে পিছিয়ে পড়ার তকমা ঘোচাতে এবার অনেক আগে থেকেই ময়দানে নেমেছিল তৃণমূল। গত অক্টোবর মাসে শহর সভাপতির পদ থেকে পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকতকে সরিয়ে দায়িত্বে দেওয়া হয় ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সৈয়দ সিরাজ জিম্মিকে। ওয়ার্ড ভিত্তিক ইলেকশন কমিটি গড়া হয়। এরই মধ্যে বীরভূম লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে সর্বাধিক লিড যাতে রামপুরহাট বিধানসভায় হয় সেটা নিশ্চিত করার কথা বলেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লিড না থাকলে পদ থাকবে না, সেই বার্তাও দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে শহর থেকে ৭৩২৭ ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল। ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে শুধুমাত্র তিনটি ওয়ার্ডে এগিয়ে শাসকদল। খোদ শহর সভাপতির ওয়ার্ডে ৩৭৬টি ভোটে বিজেপি এগিয়ে। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১১৯৭, ৮-এ ১১৮১, ১৬-তে ৮৮৫ ও ৭-এ ৮৭৬ ভোটে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। শহরের ৫৩টি বুথের মধ্যে মাত্র ১৪টিতে এগিয়ে ছিল শাসকদল।

    তৃণমূলের একাংশের দাবি, দলের নেতাদের অনেকের হাবভাবই পাল্টে গিয়েছে। সেজন্যই শহরের মানুষ তৃণমূল থেকে মুখ ফিরিয়েছে। গত জুন মাসে হারের পর্যালোচনায় বসে এমনই নানা বিষয় উঠে আসে। কাউন্সিলারদের ক্ষমতা খর্ব করেন দলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। ওয়ার্ড ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজে নামে দল। সম্প্রতি শহর থেকে যাতে লিড আসে সেই বিষয়টি দেখার জন্য রাজ্য থেকে আশিসবাবুকে বলা হয়েছে। এরপরই ওয়ার্ড ভিত্তিক বৈঠক শুরু করেছেন তিনি। গত মঙ্গলবার দুপুরে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠকে বসেন আশিসবাবু। সেখানে নিষ্ক্রিয় ও কাজ না করার মনোভাব থাকায় ওয়ার্ডের তিনটি বুথের সভাপতিদের সরিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে যথাক্রমে অলোক বাউড়ি, শ্রীদাম বাউড়ি ও সপ্তম লেটকে বুথ সভাপতি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনটি বুথেরই ভোটার তালিকা যাচা‌঩ইয়ের দায়িত্বে থাকা বিএলএদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

    যদিও আশিসবাবু বলেন, ওঁদের সরিয়ে দেওয়া হলেও দলের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। তবে পদে থাকবেন, অথচ দলের কাজ করবেন না তা হবে না। এই ওয়ার্ডের দলীয় কাউন্সিলার প্রিয়নাথ সাউ বলেন, বিধায়ক দলকে মজবুত করতে যা সিদ্ধান্ত নেবেন তাতেই আমার সহমত রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)