নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: হাওড়া-বর্ধমান মেইন শাখায় প্রায় কোনও লোকাল ট্রেনই সময়ে চলে না। তা নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভের অন্ত নেই। তারই সঙ্গে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে কোন্নগর রেল স্টেশন। এলাকার যাত্রীদের একাংশ বলছে, যেভাবে তাঁদের যাতায়াতের পথে যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে, তাতে স্টেশনে ট্রেন ধরতে আসা যাত্রীদের কাছে ক্রমশ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সমস্যা কোথায়? কোন্নগর স্টেশনের পূর্ব দিকের বাসিন্দাদের বড় অংশই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রেল লাইন টপকে ডাউন বা আপ প্ল্যাটফর্মে উঠতেন। ওভারব্রিজ থাকলেও, তার সিঁড়ি অত্যন্ত খাড়া থাকার দরুণ সেই পথ এড়িয়ে চলতেন অনেকেই। যাত্রীরা যাতে রেললাইন টপকাতে না পারেন, তার জন্য আসা-যাওয়ার রাস্তায় লোহার জালের বেড়া দিয়ে দিয়েছে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। সেই জালের নীচে দিয়ে গর্ত তৈরি করে যাত্রীরা যাতে না যেতে পারেন, তার জন্য সিমেন্টের স্ল্যাব চাপানো হয়েছে বেড়ার গায়ে। রেল কর্তৃপক্ষের যুক্তি, লাইন টপকাতে গিয়ে পাছে বিপদ ঘটে, তাই এই ব্যবস্থা। আশ্চর্যের বিষয়, কোন্নগরের পশ্চিম দিক, অর্থাৎ কানাইপুর-নবগ্রামের বাসিন্দারা যখন আপ বা ডাউন প্ল্যাটফর্মে আসছেন, তাঁদের অবাধে লাইন টপকানোর সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সেখানে কোনও বেড়া নেই। যাত্রীদের বক্তব্য, লাইন পারাপার করতে না দেওয়াই যদি কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য হয়, তাহলে একই স্টেশনে দু’রকম নীতি কেন? বয়স্ক, মহিলা ও শিশুরা তো বটেই, সাধারণ যাত্রীরাও খাড়া ওভারব্রিজে চলাফেরা করতে নাজেহাল হচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, অনেক স্টেশনেই লিফট বসেছে। অথচ কোন্নগরে তা দূর অস্ত। সেই পরিষেবা না দিয়ে কেন সমস্যা বাড়ানো হল, তা বুঝতে পারছেন না অনেকেই।
সমস্যার এখানেই শেষ নয়। পশ্চিম দিক থেকে স্টেশনে আসার মূল রাস্তার ধারে মাস কয়েক আগে নতুন সাইকেল এবং বাইক স্ট্যান্ড তৈরি হয়েছে। সেখানে পূর্ব রেলের লোগো সহ ব্যানার টাঙিয়ে গ্যারেজ পরিষেবা চলছে। যাত্রীদের বলা হচ্ছে, এটি পূর্ব রেলের নিজস্ব গ্যারেজ। সেই স্ট্যান্ডের সীমানার বাইরে রাস্তার উপর লাইন নিয়ে বাইক ও সাইকেল রাখা হচ্ছে। সেখান দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে হাজার হাজার যাত্রী অসুবিধায় পড়ছেন প্রতিদিন। অপরিসর রাস্তায় টোটোর উৎপাতে এমনিতেই অতিষ্ঠ যাত্রীরা। তার উপর গ্যারেজের নামে নয়া সঙ্কটে নাজেহাল তাঁরা। পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, রেল লাইনের ধার দিয়ে সর্বত্রই বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে। যেটুকু জায়গা ফাঁকা আছে, সেখানেও বেড়া দেওয়া হবে। পাশাপাশি ফাঁকা জায়গায় গ্যারেজ তৈরির জমি লিজ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তেমনটাই হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন পূর্ব রেলের জনসংযোগ বিভাগের কর্তারা।