জেলায় জেলায় পৌঁছে গিয়েছে ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকা। স্বভাবতই এই তালিকায় অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত বা ‘টেন্টেড' শিক্ষকদের নাম নেই। প্যানেল বহির্ভূত, র্যাঙ্ক জাম্পিং এবং ওএমআর (OMR) কারচুপির অভিযোগ ছিল এঁদের (টেন্টেডদের) বিরুদ্ধে। শিক্ষা দপ্তরের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তালিকায় যাঁদের নাম নেই অর্থাৎ ‘টেন্টেড বা অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত শিক্ষকরা এপ্রিল মাসের বেতন পাবেন না। তাঁরা আর স্কুলে যেতেও পারবেন না।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এমন ‘দাগী’ (টেন্টেড) শিক্ষকের সংখ্যাটা প্রায় ১৮০ জন বলে জানা গিয়েছে। বাকি ১২২৯ জন ‘যোগ্য’ শিক্ষক। অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ডি আই পলাশ রায় জানিয়েছেন, ‘শিক্ষা দপ্তরের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী জেলায় ‘যোগ্য’ শিক্ষকের সংখ্যা ১০৭২ জন।’
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে এই সময় অনলাইন-র হাতে মোট ৪টি তালিকা এসে পৌঁছেছে। নবম-দশম শ্রেণির দুটি এবং একাদশ-দ্বাদশের ২টি। নবম-দশমের প্রথম তালিকায় ৫৯৭ জন যোগ্য শিক্ষকের নাম আছে। দ্বিতীয় তালিকায় আছে ৫৫ জনের নাম। অপরদিকে, একাদশ-দ্বাদশের প্রথম তালিকায় ৪৯৩ জন এবং দ্বিতীয় তালিকাতে ৮৪ জন যোগ্য শিক্ষকের নাম রয়েছে। তালিকা অনুযায়ী পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১২২৯ জন ‘যোগ্য’ শিক্ষক। তাঁরা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন এবং বেতন পাবেন।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রায় ১৪০০ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়। এই তালিকায় যোগ্য, অযোগ্য সকলেই ছিলেন। তবে এই তালিকায় খানিকটা হলেও স্পষ্ট হল ছবিটা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তবে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে তাতে অন্য জেলা থেকে এই জেলায় বদলি হয়ে এসেছেন এবং 'যোগ্য' শিক্ষক, তাঁদের নাম এই জেলার তালিকাতে নেই। তবে, পূর্বের জেলার তালিকাতে যথারীতি তাঁদের নাম আছে বলে জানা গিয়েছে শিক্ষা দপ্তর সূত্রে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৬ প্যানেলের যোগ্য শিক্ষকরা স্কুলে যোগদান করতে পারবে শর্তসাপেক্ষে। কোর্টের এই রায়ের পরেও যোগ্য ও অযোগ্যের তালিকা প্রকাশিত না হওয়ায় অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষকরা স্কুলে যাননি। বুধবার স্কুলে স্কুলে যোগ্য শিক্ষকের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। এবার কি তাহলে শিক্ষকরা কাজে যোগদান করবেন? এটা নিয়েই চিন্তায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা। বুধবার সন্ধ্যায় অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস সংগঠনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার সভাপতি অমিতেশ চৌধুরী এই সময় অনলাইন-কে বলেন, ‘২০১৬-র প্যানেল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত (বদলির বিষয়টি মাথায় রেখে) 'যোগ্য' শিক্ষকদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরী করে, তার ভিত্তিতেই স্যালারি রিক্যুইজ়িশন সাবমিট করা হবে। বাকিদের নাম বাদ চলে যাবে।’