সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বাড়ির সামনে ভারতীয় পতাকা হাতে গোটা গ্রামের ভিড়! পরপর ঢুকল গাড়ি। একটি গাড়ির ভিতরে নামালো হল আইবি অফিসার মণীশরঞ্জন মিশ্রের কফিনবন্দি দেহ। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন স্ত্রী জয়া মিশ্র। স্লোগান উঠল, ‘মণীশরঞ্জন অমর রহে’, ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’।
ঘড়ির কাঁটা তখন সাড়ে বারোটা পার করেছে। পুরুলিয়ার ঝালদার বাড়িতে শায়িত আইবি অফিসার মণীশরঞ্জনের দেহ। কফিনের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়ল ১২ বছরের ছেলে। সবটা বুঝতে না পারা ৬ বছরের কন্যাসন্তানের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। প্রায় অজ্ঞান স্ত্রীকে ধরে আনা হল কোনওমতে। কাছে টেনে নিলেন পুলিশ সুপার। ফের স্লোগান, ‘মণীশরঞ্জন অমর রহে’। আইবি অফিসারে এক ফালি উঠানের চিত্র এটাই।
মঙ্গলবার জঙ্গিদের গুলিতে মারা গিয়েছেন ঝালদার মণীশরঞ্জন। পরিবার নিয়ে বৈসরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের সামনেই গুলি করে মারা হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর দেহ আসে ঝাড়খণ্ডে। সেখান থেকে ঝালদার বাড়ি। পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কাঁধে নিহত আইবি অফিসার মণীশরঞ্জন মিশ্র-র কফিনবন্দি দেহ তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে আসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। এসেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
তাঁর এই অকালপ্রয়াণে পুরুলিয়ার ঝালদায় ১২ ঘন্টার বনধ চলছে। ঝালদার নাগরিক মঞ্চ ও ঝালদা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা বনধে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে শামিল হয়েছেন মানুষজন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই বনধ চলবে।