বৃহস্পতিবার সকালেই তেহট্টের এক জওয়ানের পাক সীমান্তে মৃত্যুর খবরে মন ভারাক্রান্ত বাঙালির। সন্ধ্যায় এল আরও এক খারাপ খবর। পাকিস্তানে সেনার হাতে আটক জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউয়ের বাড়িও হুগলির রিষড়ায়। খবর পৌঁছেছে বাড়িতেও। ভিড় জমিয়েছে সংবাদ মাধ্যমগুলি। আর ভয় বেড়েছে পরিবারের। প্রতিটা মুহূর্ত তাঁদের যেন অস্বস্তি-আতঙ্ক বাড়ছে। কারণ, তিনি পাকিস্তানে ঢুকে পড়েছেন।
পহেলগাম হামলা নিয়ে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতি মুহূর্তে নানা দিকে মোড় নিচ্ছে। এর মধ্যে BSF-এর ওই জওয়ানকে আটক করেছে পাকিস্তান রেঞ্জার্স। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে মোতায়েন ছিলেন ওই বিএসএফ জওয়ান। বুধবার বিকেলে ‘ভুল করে’ তিনি সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েন। তার মুক্তির জন্য বর্তমানে দুই বাহিনীর মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং চলেছে বলে খবর।
জানা গিয়েছে, পূর্নমের বয়স ৪০ এর কাছাকাছি। তাঁর বাড়ি রিষড়ার হরিসভায়। পাঞ্জাবের ফিরোজগঞ্জ বর্ডারে পোস্টেড তিনি। ৩১ মার্চ বাড়ি থেকে ছুটি কাটিয়ে যান তিনি। তাঁর বাবা-মা, স্ত্রী ও সাত বছরের এক সন্তান রয়েছে। ছেলের খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর মা দেবন্তি দেবী। কোনও মতে বলেছেন, ‘ছেলেকে সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হোক।’
স্ত্রী রজনী সাউ ঘটনার পর থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নে খানিক চোয়াল শক্ত করে তিনি বলেন, ‘ওর এক বন্ধু ফোন করেছিলেন। তিনিই জানিয়েছেন, অন ডিউটি থাকা অবস্থায় পাকিস্তানে ওকে ধরে ফেলা হয়েছে। আমার সঙ্গে মঙ্গলবার রাতেও কথা হয়েছে। ১৭ বছর ধরে বিএসএফে রয়েছে। আমি চাই, তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরে আসুক।’
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বেড়েছে তাঁদের বাড়ির সামনে। বাড়িতেও সকলের নজর টিভির দিকে। যদি কিছু ভালো খবর পাওয়া যায়। প্রতিবেশী রাজকুমার সাউ বলছিলেন, ‘আজকেই আমরা ঘটনার কথা শুনেছি। বাড়ির প্রতিটা মানুষ ভালো। দোলেও দেখা হলো।’ গোটা পাড়া সেই সঙ্গে রাজ্যবাসীও এখন অপেক্ষা করছে ভালো খবর শোনার জন্য।
তথ্য: সুজয় মুখোপাধ্যায়