স্নানঘাটের দায়িত্বে এনডিআরএফ, জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে কড়া নিরাপত্তা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৫ এপ্রিল ২০২৫
আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। ৩০ এপ্রিল দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে। জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরনো জগন্নাথ মন্দির তথা নতুন মাসির বাড়ির কাছে একটি ঘাট করা হয়েছে। সেই ঘাটে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের কথা মাথায় রেখে ১৪টি স্নানঘাটেও বাড়তি নজরদারি চালানো হবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ওল্ড এবং নিউ দিঘায় থাকা ১৪টি স্নানঘাটে পুণ্যার্থীদের ভিড়ের কথা মাথায় রেখেই এনডিআরএফ টিম প্রস্তুত থাকবে। ২৬ এপ্রিল ১ কোম্পানি এনডিআরএফ দিঘায় পৌঁছে যাবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর ওই টিম দিঘা ছাড়বে।
বিপর্যয় ব্যবস্থাপন দপ্তরের প্রধান সচিব রাজেশ সিংহ দিঘার বিভিন্ন স্নানঘাটের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেছেন। প্রতিটি ঘাটে তিনজন করে নুলিয়া, সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার এবং পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে খবর। ৩০ তারিখ বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন দপ্তরের সচিবরা দিঘায় এসে প্রস্তুতি খতিয়ে দেখছেন। সম্প্রতি বিদ্যুৎ দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস দিঘায় এসে প্রস্তুতিপর্ব সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছেন। দিঘার সমুদ্রে ৭টি স্পিড বোটে নজরদারি চালানো হবে। প্রতিটি ঘাটে এনডিআরএফ টিমও বহাল থাকবে। যে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের তৎপরতা তুঙ্গে রয়েছে।
মন্দির উদ্বোধনের দিন বিশিষ্টদের অনেকেই সমুদ্রে স্নান সেরে মন্দিরে পুজো দিতে যাবেন। সেই কারণেই বাড়তি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। নতুন জগন্নাথ মন্দিরের সোজাসুজি সমুদ্র বরাবর মাইতি ঘাটকেও নতুনরূপে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। জগন্নাথের মাসির বাড়ির ঘাটও সংস্কার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দিঘা শহরকে নীল-সাদা রংয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। দিঘা ওয়েলকাম গেট থেকে উদয়পুর পর্যন্ত সমস্ত ডিভাইডার, গার্ডওয়াল, ইলেকট্রিক পোস্ট রং করা হয়েছে। ওল্ড দিঘার ২ নম্বর বিশ্ব বাংলা ঘাটেও নীল-সাদা রংয়ের প্রলেপ পড়েছে।
উপকূল এলাকার দায়িত্বে থাকা ডিএসপি ডিএন্ডটি আবুনূর হোসেন বলেন, ‘মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে প্রচুর মানুষের ভিড় হবে। তাই বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি স্নানঘাটে স্পিড বোটে যেমন নজরদারি চলবে, তেমনই দিঘাজুড়ে বাড়তি নজরদারি চালানো হবে।’ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, দিঘায় জগন্নাথ মন্দির প্রাঙ্গণে যানবাহন এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য ১০০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে মুখ্যসচিব, ডিজি-সহ পাঁচ মন্ত্রী আগেভাগে দিঘায় পৌঁছে যাবেন। থাকবেন বহু শিল্পপতি। সেইজন্য ভিআইপি চলাচল নিয়ন্ত্রণ, যানবাহন ব্যবস্থাপনা ও জনতাকে সামলানো – এই সবকিছুই করবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা।
উল্লেখ্য, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘাতেও জগন্নাথ মন্দির নির্মিত হয়েছে। ৩০ তারিখ এই মন্দিরেরই উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্দির উদ্বোধনের পর স্বাভাবিকভাবেই সেখানে পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন। ২৯ এপ্রিল দিঘার মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত হবে বিশেষ যজ্ঞ।