দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পরপরই এরাজ্যে অজ্ঞাতপরিচয় সন্দেহভাজনদের গা ঢাকা দেওয়া নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডলে এনিয়ে পোস্ট করেন তিনি। অভিযোগ ছিল, বারুইপুরের এক আবাসনে লুকিয়ে দুই কাশ্মীরি, ছাদে অ্যান্টেনা বসিয়ে রীতিমতো জঙ্গি নেটওয়ার্ক চালাচ্ছে। এই অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। খোঁজখবর নিয়ে পুলিশ সুপার সাফ জানিয়েছেন, কাশ্মীরি নন, ওঁরা মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। পেশায় ইঞ্জিনিয়র, ব্যবসার জন্য বারুইপুরে জমি দেখেছেন। সেখানেই একটি আবাসন ভাড়া নিয়ে থাকেন। কারও কোনও অপরাধমূলক কাজের ইতিহাস নেই। অযথা কেউ যাতে আতঙ্ক না ছড়ায়, সেই বার্তা দিয়েছেন বারুইপুরের পুলিশ সুপার।
বৃহস্পতিবার বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালি সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, ”যাদের কথা বলা হয়েছে, তারা কেউ কাশ্মীরি নন, মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে এদের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যকলাপের কোনও প্রমাণ মেলেনি। তাঁরা ব্যবসার কাজ কয়েকদিন ধরে বারুইপুরে এসে রয়েছেন। বাড়ির ছাদে বসানো অ্যান্টেনা ইন্টারনেটের জন্য বসানো হয়েছে।” তিনি আরও জানান, শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। তার জন্য দু’জনকে ডেকে পাঠানো হয় থানায়। এরপরই বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে, তা খতিয়ে দেখে সাংবাদিক বৈঠক করেন বারুইপুরের এসপি।
কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ পর্যটকের নৃশংস হত্যার পরপর শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, বাংলায় লুকিয়ে কাশ্মীরিরা যথেষ্ট সন্দেহজনক। তারা কারা? তাঁর সেই দাবি নস্যাৎ করে পুলিশ সুপার প্রকাশ্যে আনলেন তাঁদের পরিচয়। জানালেন, দুই ইঞ্জিনিয়ার মধ্যপ্রদেশ থেকে বাংলায় এসেছেন ব্যবসা করবেন বলে। কলকাতায় এতটা জমি পাওয়া যাবে না, তাই তাঁরা শহরের অদূরে বারুইপুর এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারই আশপাশে জমি খুঁজেছেন। তাঁরা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় নিজেরাই ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। কোনও সন্দেহজনক ক্রিয়াকলাপ নেই। অযথা যেন কেউ এভাবে জঙ্গি আতঙ্ক না ছড়ান, সেই আবেদনও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি। পুলিশের এই ভূমিকায় অবশ্য শুভেন্দু অধিকারী ধন্যবাদ জানিয়েছেন।