সংবাদদাতা, পতিরাম ও গঙ্গারামপুর: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের রাশ আগে থেকেই মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের হাতে ছিল। পছন্দের লোক সভাধিপতি হওয়ার পর এবার মেন্টর পদে তাঁর ঘনিষ্ঠ শঙ্কর সরকার ও কো-মেন্টর হিসেবে শিপ্রা নিয়োগীর নাম ঘোষণা হয়েছে। এরপরেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য মৃণাল সরকার। ফেসবুকে পোস্ট করে দলের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন তিনি। অতীতে বিপ্লবদের বিজেপিতে যোগদানের প্রসঙ্গ তুলে এবং ছবি পোস্ট করে দলের সদস্যদের ‘গেরুয়া অভিনন্দন’ জানিয়েছেন মৃণাল। যাঁরা দলত্যাগ করে তৃণমূলকে সাইনবোর্ড করার হুমকি দিয়েছিলেন, তাঁরাই পদ পাচ্ছেন বলে আক্ষেপ প্রাক্তন জেলা সভাপতির।
বৃহস্পতিবার বালুরঘাটে বসে মৃণাল বলেন, যাঁরা একসময় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন, দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কুৎসা করতেও ছাড়েননি, তাঁরাই আবার দলে ফিরে সামনের সারিতে। দুর্দিনে যাঁরা দলকে আগলে রেখেছেন, তাঁদের মনে সংশয় আসতেই পারে। সেই আবেগ থেকেই সাধারণ কর্মী হিসেবে পোস্ট করেছি। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বিপ্লব মিত্রকে ফোন এবং মেসেজ করা হলেও জবাব মেলেনি। তবে মন্ত্রীর অনুগামী বলে পরিচিত জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, এসব অপপ্রচার করে লাভ নেই। মেন্টর, কো-মেন্টর কিংবা অন্যান্য পদে কে বসবেন তা বিপ্লববাবু কিংবা আমরা ঠিক করি না। তাঁদের রাজ্য কমিটি নিয়োগ করে। মৃণালের এই মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তাছাড়া এরকম কথা বলা মানে তো রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে টিকিট নিয়ে মনোমালিন্যে দল ছেড়েছিলেন বিপ্লব। সেইসঙ্গে জেলা পরিষদে দলের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে সভাধিপতি সহ ১০ জনকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। দিল্লিতে গিয়ে যোগ দেওয়ার বছরখানেকের মধ্যে ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন তাঁরা। পরবর্তীতে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে বিপ্লব গোষ্ঠী। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের ১৮টি সিটের সবকটিতেই জয়ের পর সভাধিপতির চেয়ারে বিপ্লব ঘনিষ্ঠ চিন্তামণি বিহাকে বসানো হয়। বিপ্লব মিত্র গোষ্ঠীর হাত শক্ত হতেই ক্ষুব্ধ মৃণাল। যদিও এই বিতর্ক দ্রুত বন্ধ হোক চান রাজ্য তৃণমূলের সম্পাদক এবং প্রাক্তন জেলা সভাপতি গৌতম দাস। তাঁর কথায়, দল অস্বস্তিতে পড়ে, এরকম কাজ থেকে সবার বিরত থাকা উচিত। কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তা নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য না করে রাজ্য নেতৃত্বকে জানাক।