নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে চলছে হিন্দুদের উপর অত্যাচার। হিন্দুদের ওপর ইউনুস সরকার অত্যাচার চালাচ্ছে। আমরা অতিষ্ঠ। তাই ভয়ে সব সম্পত্তি বিক্রি করে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বাংলাদেশ ও ভারতীয় দালালদের দিয়ে অবৈধভাবে কাঁটাতারের বেড়া টপকে ভারতে এসেছি। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের আশিঘর ফাঁড়ির জালে ধরা পড়ে এমনটাই দাবি যতীনচন্দ্র রায়, গোলাপি রানি, সজীব রায়দের।
তিন শিশু সহ মোট নয় বাংলাদেশি নাগরিককে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করে পলিস। তাদের এদেশে থাকতে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বাড়ির মালিককেও। পুলিস জানিয়েছে, ধৃত ন’জনের মধ্যে যতীনচন্দ্র রায়, বালুচন্দ্র রায়, বালু রানি, গোলাপি রানি, ঝর্না রানি, সজীব রায় ছাড়াও তিনজন শিশু রয়েছে। বাড়ির মালিকের নাম নির্মল মজুমদার।
স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাতে শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন ফকদইবাড়ির একটি বাড়িতে হানা দেয় আশিঘর ফাঁড়ির পুলিস। সেখানেই গত ২২ দিন ধরে দুই পরিবারের ন’জন সদস্য থাকছিল। রাতেই তাদের ফাঁড়িতে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস। ভরতে প্রবেশের প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেখাতে না পারায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্তকারী পুলিস অফিসাররা জানতে পারেন, এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহেই এরা ভারতে ঢোকে। বাংলাদেশে ওদের যেসমস্ত সম্পত্তি ছিল সবই বিক্রি করে দেয়। এরপর হাতে যা টাকা আসে সেই টাকা দুই পারের দালালদের দিয়ে ফুলবাড়ির কোনও একটি এলাকা দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া টপকে ভারতে প্রবেশ করে।
ফকদইবাড়িতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল এরা। দু’টি পরিবারই বাংলাদেশের রংপুর জেলায় থাকত। তাদের দাবি, ওই দেশের হাসিনা সরকার পরিবর্তনের পর ইউনুসের শাসনে বসবাস করা রীতিমতো কষ্টের হয়ে পড়েছে। সেই কারণেই সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে এপারে আসতে বাধ্য হয়েছে তারা। বাংলাদেশ ও ভারতের এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাথাপিছু ২০ হাজার টাকা দিয়ে এপারে আসে। এর আগেও ওই এজেন্টদের মাধ্যমে ভারতে থাকার জন্য জায়গা দেখতে যতীন দু’বার অবৈধভাবে এ দেশে এসেছিল বলে পুলিস প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে।
শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, আমরা নয় বাংলাদেশি সহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। ধৃতদের মধ্যে একজন যার বাড়িতে বাংলাদেশিরা আশ্রয় নিয়েছিল। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।