তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের সাতটি বড় থানা ও গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি ফাঁড়ির সিসি ক্যামেরার রক্ষণাবেক্ষণ করতে রীতিমতো কালঘাম ছুটছে পুলিসের। মূলত, পিপিপি মডেলে বসানো এই সিসি ক্যামেরাগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করতে যে খরচ এবং লোকবল প্রয়োজন তা পেতে বা জোগাড় করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যার জেরে বিভিন্ন থানা এলাকায় একাংশ সিসি ক্যামেরা অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। যদিও পুলিসের দাবি, সেন্ট্রাল কন্ট্রোলরুমে যে সকল সিসি ক্যামেরা রয়েছে সেগুলি সঠিকভাবে রাখা হয়। কিন্তু একাধিক এজেন্সি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যবসায়িক মহল থেকে পুরসভা, মহকুমা পরিষদ এলাকায় বেশকিছু সিসি ক্যামেরা অকেজো হয়ে রয়েছে। সেগুলি দ্রুত মেরামতির চেষ্টা করা হচ্ছে।
শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, আমরা প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সিসি ক্যামেরা সেন্ট্রাল ভাবে নজরদারি করে থাকি। বেশকিছু এলাকায় কিছু কারণে সিসি ক্যামেরা অকেজো হয়ে ছিল। আমরা তা ঠিক করেছি। আর যেগুলি খারাপ হয়ে রয়েছে সেগুলি ঠিক করার কাজ চলছে।
সিসি ক্যামেরা খারাপ থাকলে অপরাধ দমনে পুলিসের পক্ষে তা কতটা বেশি চ্যালেঞ্জের হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, সিসি ক্যামেরা অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অবশ্যই সেই ক্যামেরা থেকে পাওয়া ফুটেজের সাহায্যে অপরাধ সংগঠিত করার প্রক্রিয়া দ্রুত জানতে সক্ষম হই। তবে এছাড়া পুলিসের অন্যান্য তদন্ত প্রক্রিয়াও রয়েছে। যার মাধ্যমে আমরা যেকোনও ঘটনার নেপথ্যের কারণ যাচাই করে থাকি। গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সিসি ক্যামেরা সব সময় ঠিক রাখা হয়।
শিলিগুড়ি পুলিস কমিশনারেটে শিলিগুড়ি, ভক্তিনগর, মাটিগাড়া, বাগডোগরা, প্রধাননগর, মহিলা, ভোরের আলো, সাইবার ক্রাইম থানা রয়েছে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পুলিস ফাঁড়ি হিসেবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, আশিঘর, পানিট্যাঙ্কি পুলিস ফাঁড়ি রয়েছে। এসব এলাকা শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটি থানা এবং ফাঁড়িতে এলাকায় অন্ততপক্ষে ৪০টি করে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এসব ক্যামেরা কখনও কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, কখনও ব্যবসায়িক মহল বা পুলিসের তরফে লাগানো হয়েছে। পুলিসের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক সময় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যবসায়িক মহল ক্যামেরা লাগিয়ে দিলেও পরবর্তী কালে সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে বারবার বলার পর কখনও লোকবলের অভাব আবার কখনও প্রযুক্তিগত কারণে সেই সকল সিসি ক্যামেরাগুলি খারাপ হয়ে গেলে তা ঠিক করতে কালঘাম ছোটে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে ঢাকঢোল পিটিয়ে পুলিসের মদত করা হয় বলে প্রচার করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণে ক্ষেত্রে সদিচ্ছার অভাব দেখা যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মুশকিলে পড়তে হয় পুলিসের তদন্তকারীদের একাংশকে। তবে সমস্ত জট কাটিয়ে পুলিস এবং অন্যান্য এজেন্সি বা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মিলিতভাবে এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করলে আখেরে লাভ হবে শহরবাসীর। নিজস্ব চিত্র।