সংবাদদাতা, লালবাগ: নবগ্রাম থানার গুড়াপাশলা পঞ্চায়েতের গুড়া গ্রামে কীটনাশক খেয়ে এক বৃদ্ধ দম্পতি আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতদের নাম শক্তি হালদার(৬৫) ও সাধনা হালদার(৬০)। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তাঁদের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। নবগ্রাম থানার এক পুলিস আধিকারিক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ দম্পতির ছেলে বিএসএফ জওয়ান। তাঁর সঙ্গে নবগ্রাম থানা এলাকার একটি মেয়ের ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে। তিনি ওই মেয়েকে বিয়ে করবেন বলে স্থির করেন। কিন্তু, বৃদ্ধ দম্পতি ছেলের বিয়ে ওই মেয়ের সঙ্গে দিতে রাজি ছিলেন না। তা নিয়ে ছেলের সঙ্গে অশান্তির জেরে দম্পতি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিস তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে। দুই মেয়ের আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একমাত্র ছেলে বিএসএফে কর্মরত। বর্তমানে তিনি মণিপুরে কর্মরত। শনিবার দু’মাসের ছুটিতে বাড়ি এসেছেন। সম্প্রতি ছেলের বিয়ে দিতে তোড়জোড় শুরু করেছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু, ছেলে কিছুতেই বিয়েতে রাজি ছিল না। বৃদ্ধ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন নবগ্রাম এলাকার একটি মেয়ের সঙ্গে ছেলের ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে। ওই মেয়েকে ছেলে বিয়ে করবে বলে স্থির করেছে। কিন্তু, দম্পতি ওই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। এই বিষয়টি তাঁরা ছেলেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। আর এই নিয়েই বৃদ্ধ দম্পতির সঙ্গে ছেলের মনোমালিন্য চলছিল।
তার মধ্যে বুধবার রাতে বৃদ্ধ দম্পতি ঘরে রাখা কীটনাশক খেয়ে নেন। পরিবারের লোকজন জানার পর প্রতিবেশীদের সাহায্যে নবগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাতেই দু’জনকে বহরমপুরে রেফার করা হয়। গভীর রাতে বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে দু’জনের মৃত্যু হয়।
মৃত শক্তিবাবুর ভাই ক্ষেত্রনাথ হালদার একই বাড়িতে থাকেন। তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে আমি অসুস্থ। রাত ১০টা নাগাদ বউদি আমাকে দেখতে আসেন। কিছুক্ষণ কথাবার্তা ও খোঁজখবর নিয়ে চলে যান। তারপর আমি ঘুমিয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পরে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে উঠে গিয়ে দেখি দাদা ও বউদি দু’জনেই বমি করে পড়ে রয়েছেন। কেন যে এমন হল কিছুই বুঝতে পারছি না।
বাবা-মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে এসেছেন দুই মেয়ে। তারাও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের আত্মহত্যার বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।