সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া মুরারইয়ের কনকপুরে ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমোদন ছাড়া বেআইনিভাবে ওষুধের দোকান চলছিল। ভুয়ো ফার্মাসিস্ট দিয়ে ২০বছর ধরে ওষুধ বিক্রি যেমন চলত, তেমনই দোকানমালিক রোগীও দেখত বলে অভিযোগ। অবশেষে পুলিস ও ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের আধিকারিকরা এই কারবারের পর্দা ফাঁস করলেন। বিপুল পরিমাণ ওষুধ উদ্ধারের পাশাপাশি দোকানটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। দোকানমালিক ফেরার। জেলা ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর অভীক দাস বলেন, উদ্ধার হওয়া ওষুধ জাল কি না-তা জানতে পরীক্ষার জন্য কলকাতার ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
রাজ্যজুড়ে জাল ওষুধ ও বেবি ফুডের বাড়বাড়ন্ত রুখতে বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন রাস্তায় নেমেছে। অভিযোগ, ঝাড়খণ্ড থেকে এরাজ্যে জাল ওষুধ ঢুকছে। এবার ঝাড়খণ্ড লাগোয়া কনকপুর গ্রামে লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকানের হদিশ মিলল। ওই এলাকা থেকে ঝাড়খণ্ডের দূরত্ব ৫০০মিটার।
বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ হঠাৎ ড্রাগ কন্ট্রোল দপ্তরের আধিকারিকরা পুলিসের সঙ্গে ওই দোকানে হানা দেন। বিপদ বুঝে দোকানমালিক মনিরুল ইসলাম বেপাত্তা হয়ে যায়। আধিকারিকরা বেলা ৩টে পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির প্রায় ৬০হাজার ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেন। পরে দোকানটি সিল করা হয়।
অভীকবাবু বলেন, ড্রাগ কন্ট্রোলের অনুমতি তো নেই-ই, ওই ব্যবসায়ীর ট্রেড লাইসেন্সও ছিল না। শুক্রবার রামপুরহাট আদালতে ওই দোকানের বিরুদ্ধে পিটিশন দেওয়া হবে।
স্থানীয়দের দাবি, প্রায় ২০বছর ধরে ওষুধের দোকানটি চলছে। ডাক্তার না হয়েও ওই দোকানমালিক রোগী দেখত। অথচ ড্রাগ কন্ট্রোল আধিকারিকরা এতদিনে খবর পেলেন-এটা হতে পারে না। ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে দপ্তরের কারও যোগসাজশ থাকতে পারে।
বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মুরারই জোনের সম্পাদক জাবির শেখ বলেন, আমরা এই অভিযানকে স্বাগত জানাচ্ছি। যদি ওই দোকানদার কোনও অনিয়ম করে থাকে, তাহলে শাস্তি পাবে। উদ্ধার হওয়া ওষুধ জাল কি না-তা দপ্তরই বলতে পারবে।
লাইসেন্স ছাড়াই ওষুধের দোকানের হদিশ মেলার খবরে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কারণ, গ্রাম থেকে শহরের অলিগলি, রামপুরহাট মেডিক্যালের সামনেও প্রচুর ওষুধের দোকান গজিয়ে উঠেছে। অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই ফার্মাসিস্টদের জায়গায় সাধারণ কর্মীরা ওষুধ বিক্রি করছেন। সমস্ত ওষুধের দোকান বৈধ কি না-তা নিয়ে মানুষের সন্দেহ বাড়ছে। বিষয়টি স্বাস্থ্যদপ্তরের দেখা উচিত বলে রামপুরহাটবাসী মনে করছেন। নিজস্ব চিত্র